হাঁস ডিম পাড়ার আগে যেমন হাঁকডাক করে, আন্দোলন নিয়ে বিএনপিও তেমনি হাঁকডাক করছে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
শুক্রবার (১৩ জানুয়ারি) সকালে রাজনৈতিক কর্মসূচিতে যোগ দিতে রাজশাহী পৌঁছার পর সার্কিট হাউসে তথ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এই মন্তব্য করেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, কয়েকদিন আগে বিএনপি যে গণ-অবস্থান কর্মসূচি পালন করল, মিছিল করল সেখানে দেখা গেছে মানুষই নেই। ওই যে, দেখবেন হাঁস যখন ডিম পাড়ে, তার আগে অনেক হাঁক-ডাক দেয়। কয়েকদিন আগে বিএনপির সমাবেশ এবং সর্বশেষ যে মিছিল- এগুলো ডিম পাড়া হাঁসের হাঁক-ডাক ছাড়া আর অন্য কিছুই নয়।
হাছান মাহমুদ বলেন, জনগণের রায় নিয়ে ক্ষমতায় আসার পর গত প্রায় ১৪ বছর থেকেই আমরা বিএনপির আন্দোলন দেখে আসছি। তারা কখনও বলে- শীতের পর আন্দোলন হবে, কখনও বলে গ্রীষ্মের পর আন্দোলন হবে, কখনও বলে বার্ষিক পরীক্ষার পর। কিন্তু পরে তাদের আন্দোলন আর মাঠে পানি পায় না। এবারের আন্দোলনও তাদের গত ১৪ বছরের ঘোষণার ধারাবাহিকতা ছাড়া আর কিছুই নয়।
তিনি বলেন, আমরা জনগণকে নিয়ে রাজনীতি করি; আমাদের ভিত্তি জনগণ। সাম্প্রতিক সময়ে আপনারা দেখেছেন সারা বাংলাদেশেই আমরা জনসভা বা সমাবেশ করেছি। সেখানে লাখ লাখ মানুষের সমাবেশ ঘটেছে। অর্থাৎ জনগণ আমাদের সঙ্গে রয়েছে। তাই প্রতীয়মান হয়েছে।
বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর বিষয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, চলমান বৈশ্বিক সংকটের কারণে সারা বিশ্বব্যাপী জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। ইউরোপে, অ্যামেরিকায় এবং ইউকেতে জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির কারণে সেখানে বিদ্যুতের রেশনিং করা হচ্ছে। বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হচ্ছে। ইউরোপ, কিংবা কন্টিনেন্টাল ইউরোপ, ইউকে এবং পৃথিবীর অন্যান্য দেশে যেভাবে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছে, আমাদের দেশে সেভাবে দাম বাড়ানো হয়নি। বিশ্ববাজারের সঙ্গে অর্থনৈতিক সামঞ্জস্য রক্ষায় এইটুকু করতেই হচ্ছে।
তিনি বলেন, বিদ্যুৎ খাতে আমাদের সরকার হাজার হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিচ্ছে। জনগণের যাতে অসুবিধা না হয়, সেজন্য সুলভ মূল্যে বিদ্যুৎ সরবরাহ করার জন্যই হাজার হাজার কোটি টাকা সরকার ভর্তুকি দিচ্ছে। সেই ভর্তুকিটা কিছুটা কমানোর জন্য সামান্য বৃদ্ধি করার প্রস্তাব করা হয়েছে। সেটিও অন্যান্য উন্নত দেশের তুলনায় কম।
হাছান মাহমুদ বলেন, জামায়াতে ইসলামী ও হেফাজতের সঙ্গে আওয়ামী লীগের সমঝোতার প্রশ্ন তোলা অবান্তর। কারণ আওয়ামী লীগ বাংলাদেশে অসাম্প্রদায়িক ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রতীক। সে লক্ষ্যে দেশ বিনির্মাণের কাজ চলছে।
আগামী ২৯ জানুয়ারি রাজশাহীতে প্রধানমন্ত্রীর জনসভা প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, আমরা জনগণকে নিয়ে রাজনীতি করি, আমাদের ভিত্তি জনগণ। সমগ্র বাংলাদেশে যে সাম্প্রতিক সমাবেশ-জনসভাগুলো করেছি, সেখানে লক্ষ লক্ষ মানুষের সমাবেশ। জনগণ যে আমাদের সাথে আছে, সেটি সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন সভা-সমাবেশে প্রতীয়মান হয়েছে।
আগামী ২৯ জানুয়ারি রাজশাহীতে যে জনসভা হতে যাচ্ছে, সেদিন রাজশাহী শহর লোকে লোকারণ্য হয়ে যাবে। আমরা যদিও মাদ্রাসা মাঠে সমাবেশের ডাক দিয়েছি, কিন্তু পুরো শহরটাই সেদিন সমাবেশে রূপান্তরিত হবে। লাখ লাখ মানুষের সমাবেশ হবে বলে আশা ব্যক্ত করেন তথ্যমন্ত্রী।
এ সময় আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, খাদ্যমন্ত্রী ড. সাধন চন্দ্র মজুমদার, তথ্য ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকসহ স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
Array