যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে ৮৮টি এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান কিনছে কানাডা। এ উপলক্ষে যুক্তরাষ্ট্র ও মার্কিন অস্ত্র প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান লকহিড মার্টিনের সঙ্গে একটি চুক্তিও চূড়ান্ত করেছে উত্তর আমেরিকার এই দেশটি।
সোমবার (৯ জানুয়ারি) কানাডার সরকার এই তথ্য সামনে এনেছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে ফাইটার জেট কেনার বিষয়ে সোমবার সংবাদ সম্মেলন করেন কানাডার প্রতিরক্ষামন্ত্রী অনিতা আনন্দ। সেখানে তিনি বলেন, যুদ্ধবিমান ক্রয়ে এক হাজার ৪২০ কোটি মার্কিন ডলারের এই চুক্তিটি গত ৩০ বছরের মধ্যে রয়্যাল কানাডিয়ান এয়ার ফোর্সে সবচেয়ে বড় বিনিয়োগ।
অনিতা আনন্দ বলেন, ‘আমাদের পৃথিবী ক্রমেই অন্ধকার হয়ে আসছে, ইউক্রেনে রাশিয়ার অবৈধ ও অযৌক্তিক আগ্রাসন এবং ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে চীনের ক্রমবর্ধমান আক্রমণাত্মক আচরণের কারণে এই প্রকল্পটির ব্যাপক তাৎপর্য রয়েছে। বিশেষ করে এতে আমাদের মিত্রদের সাথে আন্তঃকার্যক্ষমতার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।’
আল জাজিরা বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে অত্যাধুনিক এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান ক্রয়ের ঘোষণা এমন এক সময়ে সামনে এলো যখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং মেক্সিকান প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেস ম্যানুয়েল লোপেজ ওব্রাডোরের সঙ্গে ‘থ্রি অ্যামিগোস’ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো মেক্সিকো সিটিতে রয়েছেন।
মূলত যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ঘনিষ্ঠ প্রতিরক্ষা সম্পর্ক রয়েছে এমন দেশগুলোর মধ্যে কানাডা অন্যতম এবং উত্তর আমেরিকার এই দেশটি গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে তার পুরোনো বোয়িং সিএফ-১৮ ফাইটার জেটের বহর প্রতিস্থাপনের চেষ্টা করছে। এর মধ্যে কিছু আবার ৪০ বছরেরও বেশি পুরোনো।
সংবাদমাধ্যম বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে চারটি এফ-৩৫ যুদ্ধ বিমান ২০২৬ সালে এবং ২০৩২ সাল থেকে ২০৩৪ সালের মধ্যে পূর্ণ কর্মক্ষমতাসহ সমগ্র বহর হাতে পাবে কানাডা।
এছাড়া প্রতিটি যুদ্ধবিমানের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৮৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। মূলত এক হাজার ৪২০ কোটি মার্কিন ডলারের মোট প্রকল্প ব্যয়ের মধ্যে ফাইটার জেটের দাম ছাড়াও অবকাঠামো প্রস্তুত, অস্ত্র এবং অন্যান্য সম্পর্কিত খরচও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
অবশ্য যুদ্ধবিমান কেনার এই ব্যয়বহুল প্রকল্প নিয়ে কানাডায় কিছু সমালোচনা রয়েছে এবং একইসঙ্গে উঠেছে প্রশ্নও।
অ্যাক্টিভিস্ট গ্রুপ নো ফাইটার জেটস কোয়ালিশন গত ডিসেম্বরের শেষের দিকে এক বিবৃতিতে বলেছিল, ‘শীত শুরু হওয়ার সাথে সাথে কানাডিয়ানরা নিজেদের প্রয়োজন মেটানোর জন্য সংগ্রাম করছে। আর তাই আমেরিকান যুদ্ধবিমানগুলোর জন্য জনসাধারণের অর্থ ব্যয় করা ট্রুডো সরকারের দায়িত্বজ্ঞানহীন এবং অন্যায় কাজ।’
তার আরও জানায়, ‘এর পরিবর্তে, ফেডারেল সরকারের উচিত সাশ্রয়ী মূল্যের আবাসন, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা, অর্থনৈতিক সহায়তা এবং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার কাজে বিনিয়োগ করা। কানাডার পরিকল্পিত এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান কেনা অগ্রহণযোগ্য, অনৈতিক। এটি অবশ্যই বাতিল করা উচিত।’
Array