ব্রাজিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট জাইর বলসোনারোর সমর্থকরা দেশটির পার্লামেন্ট, রাষ্ট্রপতি ভবন এবং সুপ্রিম কোর্টে ব্যাপক হামলা চালিয়েছে।
স্থানীয় সময় রবিবার দেশটির সদ্য সাবেক প্রেসিডেন্ট ও কট্টরপন্থি নেতা বলসোনারোর সমর্থকরা ওইসব স্থানে তাণ্ডব চালিয়েছে। খবর বার্তাসংস্থা রয়টার্সের।
ব্রাজিলের রাজধানী ব্রাসিলিয়ায় দেশটির কংগ্রেস, সুপ্রিম কোর্ট ও প্রেসিডেন্টের প্রাসাদ কাছাকাছি স্থানেই অবস্থিত। সেখানে নিরাপত্তা বলয় ভেঙে দিয়েই ভেতরে ঢুকে পড়ে বলসোনারো সমর্থকদের হলুদ স্রোত।
প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে চলা এ ঘটনায় প্রাণহানির কোনো খবর পাওয়া যায়নি। পুলিশ ইতোমধ্যে কংগ্রেস ভবন, প্রেসিডেন্টের প্রাসাদ ও সুপ্রিম কোর্ট ভবন থেকে থেকে হামলাকারীদের সরিয়ে দিয়ে এই ভবনগুলো নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। তবে ভবনগুলো ছেড়ে যাওয়ার আগে সেখানে ব্যাপক ভাঙচুর ও ধ্বংসযজ্ঞ চালায় হামলাকারীরা। এ ঘটনায় অন্তত ২০০ দাঙ্গাবাজকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে।
সোমবার এক প্রতিবেদনে রয়টার্স জানিয়েছে, ব্রাজিলের বর্তমান বামপন্থী প্রেসিডেন্ট লুইস ইনাসিও লুলা দা সিলভা ২০২২ সালের অক্টোবরের নির্বাচনে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জাইর বলসোনারোকে পরাজিত করেন। রবিবার বলসোনারোর সমর্থকদের হামলার পর তিনি রাজধানী ব্রাসিলিয়ায় আগামী ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত ফেডারেল নিরাপত্তা হস্তক্ষেপ ঘোষণা করেছেন।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম বলছে, ক্ষমতার লড়াইকে কেন্দ্র করে রবিবার বিক্ষোভের আগুনে বিস্ফোরিত হয়ে উঠেছে ব্রাজিল। বলসোনারোর সমর্থকরা দেশটির পার্লামেন্ট, প্রেসিডেন্ট প্যালেস (রাষ্ট্রপতি ভবন) ও সুপ্রিম কোর্টে হামলা চালিয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, বলসোনারোর সমর্থকরা জাতীয় পার্লামেন্ট ও সুপ্রিম কোর্ট ভবনের জানালা ও আসবাবপত্র ভাঙচুর করছেন। তাদের অনেকে পার্লামেন্ট ভবনের ছাদে উঠে যান। ওই সময় পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ সিনেট এবং নিম্নকক্ষ চেম্বার অফ ডেপুটিজে কার্যক্রম চালাচ্ছিলেন আইনপ্রণেতারা।
বলসোনারো সমর্থকরা পার্লামেন্ট ভবনের ছাদে একটি ব্যানার টাঙিয়ে দেন, যাতে লেখা ছিল ‘হস্তক্ষেপ’। এটি দৃশ্যত সেনাবাহিনীর প্রতি আহ্বান।
বিরোধী দলের এই হামলার তীব্র সমালোচনা করে একে ‘ফ্যাসিস্ট’ আক্রমণ বলে আখ্যা দিয়েছেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট লুলা দা সিলভা।
স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হচ্ছে, রবিবার বন্যা বিধ্বস্ত আরারাকোয়ারা শহরে পরিদর্শনে গিয়েছিলেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা। সেখানে থাকা অবস্থায় রাজধানী ব্রাসিলিয়ায় হামলার খবর পান তিনি। এরপর সেখান থেকেই তিনি ডিক্রি জারি করেন।
প্রেসিডেন্ট লুলা বলেন, এই ফ্যাসিস্ট সমর্থকরা এমন কিছু করল, যা এ দেশের ইতিহাসে আগে কখনো হয়নি। যারা এই হামলা চালিয়েছে, তাদের আমরা খুঁজে বের করব এবং আইনের মাধ্যমে তাদের বিচার করা হবে।
Array