বরগুনা-২ আসনের সংসদ সদস্য মো. শওকত হাচানুর রহমান রিমনের বিরুদ্ধে টিআর কাবিখা প্রজেক্টের বরাদ্দকৃত অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ এনে দুদকে করা আবেদন ৩০ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
সোমবার বরগুনার পাথরঘাটার উপজেলার স্থানীয় এক বাসিন্দার করা রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন।
রুলে পাথরঘাটা, বেতাগী, বামনার টিআর কাবিখা প্রজেক্টের বরাদ্দকৃত অর্থ লোপাটের অভিযোগে বরগুনা-২ আসনের সংসদ সদস্য মো. শওকত হাচানুর রহমান রিমন, বরগুনার ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা, পাথরঘাটা, বেতাগী, বামনার ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ হবে না তা জানতে চেয়েছেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. কামাল হোসেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক।
গত বছরের ৯ মে দৈনিকে প্রথম আলোতে ‘কাজ না করেই কোটি টাকার টিআরের বরাদ্দ লোপাটের অভিযোগ’ শীর্ষক শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়।
প্রথম আলোর ওই সংবাদে বলা হয়, বরগুনার পাথরঘাটা ও বেতাগী উপজেলায় গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ (টিআর) কর্মসূচির অধিকাংশ প্রকল্পের কাজ শেষ না করে টাকা তুলে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। কোথাও কোথাও কাজ না করেই টাকা লোপাটের ঘটনা ঘটেছে। প্রকল্প এলাকা ঘুরে এসব তথ্যের সত্যতা মিলেছে। তবে জেলার বামনা উপজেলায় টিআরের কাজে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া যায়নি।
আরও বলা হয়, বরগুনা-২ আসনের (পাথরঘাটা-বেতাগী-বামনা) সাংসদ শওকত হাচানুর রহমান রিমনের অনুকূলে ২০২০-২১ অর্থবছরে পাথরঘাটা, বামনা ও বেতাগী উপজেলায় চার ধাপে টিআর প্রকল্পে ২ কোটি ২ লাখ ৯১ হাজার ৮০৫ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। তিন উপজেলায় প্রকল্পের সংখ্যা ৩২৩টি। এর মধ্যে পাথরঘাটা ও বেতাগীর বিভিন্ন এলাকায় অধিকাংশ প্রকল্পে অনিয়ম করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে এর দায় নিতে নারাজ সাংসদ শওকত হাচানুর। তিনি বলেন, এসব প্রকল্পের কাজ হয়েছে কি না, তা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার বিষয়। এখানে তার কোনো বিষয় নেই।
এ খবরের সূত্র ধরে গত বছরের ২৭ অক্টোবর দুদক চেয়ারম্যান বরাবরে পাথরঘাটার স্থানীয় বাসিন্দা সুলতান আহম্মেদ বরগুনা-২ আসনের সংসদ সদস্য মো. শওকত হাচানুর রহমান রিমনের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দেন।
অভিযোগে বলা হয়, স্থানীয় সংসদ সদস্য, জনগণের প্রতিনিধি আমাদের উন্নয়নের টাকা দিয়ে এলাকার উন্নয়ন না করে নিজে ব্যক্তিগতভাবে সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করে মানি লন্ডারিং আইনে অপরাধ করেন।
কিন্তু অভিযোগের নিষ্পত্তি না হওয়ায় তিনি দুদককে ৭ নভেম্বর আইনি নোটিশ দেন। তাতেও সাড়া না পেয়ে সুলতান আহম্মেদ হাইকোর্টে রিট করেন।
হাইকোর্ট রিটের শুনানি নিয়ে রুল জারি করেন। পাশাপাশি ৩০ দিনের মধ্যে দুদকে দেওয়া অভিযোগ নিষ্পত্তি করতে নির্দেশ দেন বলে জানান আইনজীবী মো.কামাল হোসেন।
রিট আবেদনে দুদক, দুদকের চেয়ারম্যান, দুদকের কমিশনার (তদন্ত), বরগুনার জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, বরগুনা-২ আসনের সংসদ সদস্য মো. শওকত হাচানুর রহমান রিমন, বরগুনার ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা, পাথরঘাটা, বেতাগী, বামনার ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তাকে বিবাদী করা হয়েছে।
Array