চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি;
চুয়াডাঙ্গা সদরের ট্যাংরামারিতে ১৫ থেকে ২০ জনের একদল কিশোর রাতের আধারে খেজুর রস চুরি করে খেতে গিয়ে গণপিটুনির শিকার হয়েছে। গ্রামবাসীদের ডাকাত সন্দেহ হলে একজোট হয়ে ধাওয়া করে গ্রামবাসীরা। এ সময় গ্রামের কোনো ব্যক্তি জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ কল করলে সদর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তিন কিশোরকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নিয়ে আসে। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাদের হেফাজতে নেই পুলিশ।
শুক্রবার (৬ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ১০টার দিকে সদরের মোমিনপুর ইউনিয়নের ট্যাংরামারি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন, চুয়াডাঙ্গা শহরের ইসলামপাড়ার লালনের ছেলে প্রীতম (১৪), জিনতলাপাড়ার মিনার ছেলে আমান (১৭), একই এলাকার শাহিনের ছেলে পারভেজ (১৬)।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গ্রামবাসীদের দাবি শীতের মৌসুমে গাছিরা অনেক কষ্ট করে খেজুরগাছ কেটে রস সংগ্রহ করে গুঁড় বা পাটালি বিক্রি করে উপার্জন করে আসছে। কিন্তু মাঠে কিংবা রাস্তার পাশে খেজুরগাছ থাকায় দূর-দূরান্ত থেকে রাতের আধারে মানুষ এসে রস খেয়ে যায়। পাহারা দিলেও একাধিক লোক থাকায় উল্টো হুমকি ধামকি দেয়। আবার অনেক সময় রস খেয়ে ভাড় ভেঙে চলে যায়।
গতকাল রাতে একদল ছেলেদের মাঠে দেখতে পেয়ে গ্রামবাসী ডাকাত ভেবে আতঙ্কিত হয়ে পড়ে এবং একসঙ্গে তাদের ধাওয়া করে। এ সময় সবাই পালাতে পারলেও তিনজন ধরা পড়ে। তাদেরকে করে চড়-থাপ্পর দিয়ে পুলিশের নিকট হস্তান্তর করা হয়।
আহত প্রীতমের বাবা লালন বলেন, রাতে শহরের ইসলাম পাড়ায় ওয়াজ শোনার কথা বলে বের হয় প্রীতম। ওয়াজে না গিয়ে ১৫-২০ জন মিলে ট্যাংরামারিতে খেজুর রস চুরি করে খেতে যায়। এ সময় গ্রামবাসী চোর সন্দেহে ধাওয়া করলে সবাই পালালেও আমার ছেলেসহ তিনজন ধরা পড়ে। তাদেরকে ব্যাপক মারধর করে পুলিশে দেওয়া হয়েছে। পরে পুলিশ তাদের উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে থানা হেফাজতে নেয়।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. হাসানুর রহমান বলেন, রাতে তিন কিশোরকে হাসপাতাকে নিয়ে আসে পুলিশ সদস্যরা। তাদের শরীরের অধিকাংশস্থানেই আঘাতের আলামত পাওয়া গেছে। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে পুলিশের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে।
উদ্ধারকারী চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাসুম বিল্লা বলেন, জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ থেকে কল পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে তিন কিশোরকে উদ্ধার করে হাপাতালে নিয়ে আসি। তারা খেজুর রস চুরি করার সময় হাতেনাতে আটক করে সামান্য মারধর করে গ্রামবাসী। চিকিৎসা শেষে তাদেরকে থানা হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। আগামীকাল তাদের পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হবে।
Array