ক্রমাগত লোকসানের তকমা ঘুচিয়ে স্বাধীনতার ৫১ বছর পর লাভের মুখ দেখলো বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। কেবল লাভই নয়, ঋণও শোধ করেছে রাষ্ট্রায়ত্ত এই সংস্থাটি। গেলো অর্থবছরে লাভের পরিমাণ ৪৩৬ কোটি টাকা।
শেখ হাসিনা সরকারের ১৪ বছরে নানা প্রতিকূলতা কাটিয়ে একের পর এক অত্যাধুনিক উড়োজাহাজ যুক্ত হয়েছে বিমানের বহরে। এগিয়ে চলেছে হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে থার্ড টার্মিনালের নির্মাণকাজ, বেড়েছে আন্তর্জাতিক রুট। সেইসঙ্গে অনলাইন সেবাসহ বেশ কিছু অর্জনে প্রতিষ্ঠার ৫১ বছর উদযাপন করছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স।
৪ জানুয়ারি, ১৯৭২। এয়ার বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল নামে যাত্রা শুরুর সময়ে হাতে মাত্র একটি ডিসি-থ্রি বিমান। ৩৬ বছর পর্যন্ত খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলা। যাত্রী সন্তুষ্টির সমীকরণের খাতা শূন্য।
২০০৮ সালে নতুন বিমান কেনার চুক্তির চার বছর পর ঘুরে দাঁড়ানোর সূচনা। এক দশকের মধ্যেই নতুন প্রজন্মের ১৫টি বিমান সক্ষমতার নতুন মাত্রা। আন্তর্জাতিক রুট বাড়াতে ছয়টি ব্র্যান্ড নিউ বোয়িং ড্রিমলাইনারের সঙ্গে তিনটি ড্যাশ এইট ফোর জিরো জিরো সবমিলিয়ে বিমানের বহরে উড়োজাহাজ সংখ্যা ২১টি।
এর মধ্যে ১৮টিই নিজস্ব হওয়ায় যাত্রীসেবার মান ও মুনাফা বৃদ্ধির পাশাপাশি করোনা দুর্যোগেও সেবা দিচ্ছে লাল-সবুজ পতাকার এই বিমান সংস্থা।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের এমডি ও সিইও শফিউল আজিম বলেন, তিন বছর পর পর বিমানে যে সংস্কারমূলক কাজ করতে হয় সেগুলো এখন আমরা নিজেরাই করছি। প্রতিটা এয়ারক্রাপ্টে দুই মিলিয়ন ডলার আমরা সাশ্রয় করছি। সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য আরো পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এ বছর বিমান ৪৩৬ কোটি টাকা নিট মুনাফা অর্জন করেছে।
আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণসহ ২০টি রুটে চলছে বিমান। প্রবাসীদের দাবি পূরণে এ বছরই টোকিও ও নিউইয়র্ক রুটে সরাসরি ফ্লাইট পরিচালনার পরিকল্পনা আছে বিমানের। দুর্নীতি-অনিয়মের বিরুদ্ধে কড়া অবস্থানে লাভ আরো বাড়বে বলে আশা ব্যবস্থাপনা পরিচালকের।
শফিউল আজিম বলেন, বিমান নতুন নতুন ডেস্টিনেশনে তাদের এয়ারলাইন্স পরিচালনায় বিশেষ করে জাপানের নারিতা, চেন্নাই, মালে এই বিষয়গুলোতে অনেক দূর এগিয়ে গেছে। আশা করছি, হজ অপারেশনের পর পরই নারিতায় অপারেশন শুরু করতে পারবো।
তিনি আরো বলেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতিতে যাত্রী সেবাকেই পুঁজি করে এগোতে চায় বিমান কর্তৃপক্ষ।
কেউ যদি অপকর্মে জড়ায় তাদের বিরুদ্ধে শুধু প্রশাসনিক বিষয় নয়, সেটি যদি ফৌজদারি অপরাধ হয়ে থাকে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রতিষ্ঠার পাঁচ দশক পেরিয়ে গেলেও উন্নত বিমানবন্দর ফ্যাসিলিটিস বহরে নিজস্ব বিমান সংযুক্তির দিক থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের যতো অর্জন গেল ১৪ বছরে। আর তাই সব ঋণ পরিশোধ করে এই রাষ্ট্রীয় সংস্থাটি এখন লাভজনক অবস্থায় আছে।
২০৩০ সালের মধ্যে এশিয়ায় শীর্ষে এবং বিশ্বের বুকে একটি স্মার্ট এয়ারলাইন্স হিসেবে পরিচিত হতে কাজ করে যাচ্ছে এই রাষ্ট্রীয় সংস্থা।
Array