জেলা প্রতিনিধি, মুন্সিগঞ্জ।।
মুন্সীগঞ্জে জেসিকা মাহমুদ (১৬) নামে স্কুলছাত্রীকে হত্যার ঘটনায় স্বীকারোমুক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছেন আটক পঞ্চসার ইউপি সদস্য জাহিদ হোসেনের মেয়ে আদিবা আক্তার (১৯)। বুধবার (৪ জানুয়ারি) বিকেলে পঞ্চসার এলাকা থেকে আদিবাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে বুধবার রাতে মুন্সীগঞ্জ আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শহিদুল ইসলামের কাছে আটক আদিবা ১৬৪ ধারার জবানবন্দী দেন। জবানবন্দী শেষে তাকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়।
জানা যায়, এর আগে মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল থেকে নিহত জেসিকার রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় বুধবার বিকেলে মুন্সীগঞ্জ সদর থানায় হত্যা মামলা করেন নিহত জেসিকার ভাই মো. জিদান।
নিহত জেসিকা মাহমুদ সদর উপজেলার সাতানিখিল এলাকার প্রবাসী সেলিম দেওয়ানের মেয়ে। সে মুন্সীগঞ্জ শহরের কোটগাঁও এলাকায় তার পরিবারের সঙ্গে ভাড়া বাড়িতে থাকত এবং এভিজেএম সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী ছিল।
স্থানীয়ভাবে জানা যায়, নিহত জেসিকা মাহমুদ ও আটক আদিবা আক্তারের সঙ্গে মুন্সীগঞ্জ ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আরিফুর রহমানের ছেলে বিজয় রহমানের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এর মধ্যে হঠাৎ আদিবাকে বিয়ের পরিকল্পনা করে বিজয়। বিষয়টি জানতে পেরে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন জেসিকা। এরপরই জেসিকাকে খুনের পরিকল্পনা করেন বিজয় ও আদিবা। পরিকল্পনা অনুযায়ী আদিবার যোগসাজশে জেসিকাকে বাসায় ডেকে শ্বাসরোধে হত্যা করে বিজয়। এরপর জেসিকা ছাদ থেকে পড়ে মারা গেছে বলে নাটক সাজান তারা। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বিজয় তাদের বাড়ি থেকে জেসিকাকে রক্তাক্ত অবস্থায় মুন্সীগঞ্জ সদর হাসপাতলে নিয়ে যায়। জেসিকার অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করে চিকিৎসক। ঢাকা যাওয়ার পথেই মারা যায় জেসিকা।
নিহতের বড় ভাই জিদান অভিযোগ করে বলেন, সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে বিজয় ফোন দিয়ে জানায় আমার বোন হাসপাতালে আছে। জেসিকা নাকি বিজয়দের বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে গেছে। এরপর আমি দ্রুত হাসপাতালে এসে অ্যাম্বুলেন্সে বোনকে নিয়ে ঢাকায় রওনা হই। পথিমধ্যে মুক্তারপুর সেতু পার না হতেই জেসিকা মারা যায়।
তিনি বলেন, আমার বোন কীভাবে তাদের বাসার ছাদে গেল? ওরা আমার বোনকে পরিকল্পিতভাবে বাসার ছাদে নিয়ে মারধর করে মেরে ফেলেছে। পরে ছাদ থেকে পড়ে যাওয়ার নাটক করছে।
নিহত জেসিকার মা রিনা বেগম বলেন, আমার মেয়েটা বিকেলে হাঁটার কথা বলে ঘর থেকে বের হয়। রাতে শুনতে পাই আমার মেয়ে মারা গেছে। মেয়ের মুখে, পেটে, শরীরের বিভিন্নস্থানে খামছি কিল ঘুষি চিহ্ন আছে। আমার মেয়েকে বিজয় ও তার বান্ধবী আদিবা মেরে ফেলেছে। আমি মেয়ে হত্যার বিচার চাই।
এ ব্যাপারে মুন্সীগঞ্জ কোর্ট পুলিশের ইন্সপেক্টর ওসি জামালউদ্দিন বলেন, আটক আদিবা দোষ স্বীকারোক্তিমূলক ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। জবানবন্দী শেষে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
Array