অনিয়মের কারণে বাতিল হওয়া গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচনের ভোটগ্রহণ বুধবার (০৪ জানুয়ারি) অনুষ্ঠিত হবে। সকাল সাড়ে ৮টা থেকে বিকাল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত এ সংসদীয় আসনে ইভিএমে একটানা ভোটগ্রহণ চলবে। উপনির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে অনুষ্ঠানে নির্বাচনের আগেরবারের অভিজ্ঞতার আলোকে ইসি থেকে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে কেন্দ্রে কেন্দ্রে পৌঁছে গেছে ইভিএমসহ সব নির্বাচনি সামগ্রী। আগেরবারের মতো সিসিটিভিতে মনিটর করা হবে এই নির্বাচন।
নির্বাচনের প্রস্তুতির কথা জানিয়ে রিটার্নিং অফিসার, ঢাকার আঞ্চলিক নির্বাচনি কর্মকর্তা মো. ফরিদুল ইসলাম বলেন, ভোটের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। আমরা প্রস্তুত। ইভিএম থাকবে, আর সিসি ক্যামেরাও থাকবে।
ইসির যুগ্ম সচিব (পরিচালক-জনসংযোগ) এসএম আসাদুজ্জামান জানান, প্রতিটি সাধারণ কেন্দ্রে ১৬ থেকে ১৭ জন এবং ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে ১৭ থেকে ১৮ জন আনসার সদস্য নিয়োজিত থাকবেন। এছাড়া পুলিশ, এপিবিএন ও ব্যাটালিয়ন আনসারের ছয়টি ভ্রাম্যমাণ ও চারটি স্ট্রাইকিং ফোর্স ভোটের মাঠে থাকবে।
ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া গত ২৩ জুলাই মারা গেলে তার সংসদীয় আসনটি শূন্য ঘোষণা করা হয়।
পরে ইসির ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী গত ১২ অক্টোবর গাইবান্ধা-৫ আসনের উপ-নির্বাচনে ভোটগ্রহণ হয়। তবে ভোটগ্রহণের সময়ে ঢাকা থেকে সিসি ক্যামেরার মনিটরিংয়ে এক-তৃতীয়াংশ কেন্দ্রে অনিয়মের দৃশ্য দেখে মাঝপথে নির্বাচন বন্ধের নির্দেশ দেয় ইসি।
বাংলাদেশে নির্বাচন কমিশনের ইতিহাসে অনিয়মের কারণে কোনও সংসদীয় আসনের নির্বাচন পুরোপুরি (সব কেন্দ্র) বন্ধ করার ঘটনা এটাই ছিল প্রথম। পরে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালের নির্দেশে অনিয়মে সম্পৃক্তদের চিহ্নিত করতে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটির সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে রিটার্নিং অফিসার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, প্রিসাইডিং অফিসার, পুলিশের উপ-পরিদর্শক, নির্বাহী হাকিমসহ শতাধিক ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা ও নির্বাচনি এজেন্টের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয় ইসি।
গত ৬ ডিসেম্বর গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচনের পুনর্ভোটের জন্য ৪ জানুয়ারি নতুন তারিখ ঠিক করে নির্বাচন কমিশন।
ফুলছড়ি ও সাঘাটা উপজেলার ১৭টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত গাইবান্ধা-৫ আসনে ভোটার মোট ৩ লাখ ৩৯ হাজার ৭৪৩ জন। ১৪৫টি কেন্দ্রের ৯৫২টি বুথে ইভিএমে ভোট হবে। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত মাহমুদ হাসান রিপন, জাতীয় পার্টির (এ) এ এইচ এম গোলাম শহীদ রঞ্জু, বিকল্প ধারার অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর আলম এবং স্বতন্ত্র নাহিদুজ্জামান নিশাদ ও সৈয়দ মাহবুবুর রহমান প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী নাহিদুজ্জামান ইসির বিরুদ্ধে অনাস্থা জানিয়ে ভোট থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন।
গাইবান্ধা-৫ উপনির্বাচন ঢাকা থেকে পর্যবেক্ষণের জন্য মনিটরিং সেল গঠন করা হয়েছে। আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবন থেকে এ মনিটরিং সেল পরিচালিত হবে।
আইডিইএ-২ এর প্রকল্প পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবুল হাসনাত মোহাম্মদ সায়েমকে প্রধান করে গঠিত সেলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স, বিজিবি, র্যাব, আনসার ও ভিডিপি এবং আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের প্রতিনিধি রয়েছেন।
Array