দেশে বর্তমানে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সুবিধার আওতায় আছেন অন্তত ১২ কোটি মানুষ। আগামী বছরের মধ্যে ১ লাখ ১০ হাজার গ্রামীণ প্রতিষ্ঠান অপটিক্যাল ফাইবার ক্যাবলের মাধ্যমে এ সুবিধার আওতায় আসবে। এই পরিষেবা দেওয়া হবে ৭০ হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও।
শুক্রবার (৩০ ডিসেম্বর) রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) তড়িৎ ও কম্পিউটার কৌশল অনুষদের আয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয়ের মিলনায়তনে দুই দিনব্যাপী ‘চতুর্থ ইলেকট্রিক্যাল, কম্পিউটার অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং (আইসিইসিটিই) ২০২২’ বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে এ তথ্য জানান শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
এতে তিনি প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যোগ দেন।
শিক্ষামন্ত্রীর পর অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন অন্যান্য অতিথিরা। তারা বলেন, আগামী ২০৩৫ সালের পর পরই আমাদের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের সবচেয়ে বড় খাত হবে আইসিটি সেক্টর। গার্মেন্টস সেক্টরকেও এ খাত অতিক্রম করবে। প্রায় ২০ লাখ মানুষ আইসিটি সেক্টরে এখন কাজ করে। আগামী ৩ বছরের মধ্যে এটি হবে ৫০ লাখ। এছাড়া আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে প্রায় এক কোটি মানুষ আইসিটি সেক্টরে কাজ করবে।
এখন পর্যন্ত দেশের ১ লাখ ১৫ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মাল্টিমিডিয়া ক্লাস রুম এবং ১৩ হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব স্থাপিত হয়েছে। প্রত্যেক উপজেলায় হতে যাচ্ছে শেখ রাসেল স্কুল অব ফিউশন। এছাড়া হবে জয় ডিসেন্ট সেন্টার। যেখানে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের আধুনিক সব প্রযুক্তি শেখানো হবে। ইতোমধ্যেই দেশে ১০টি হাই টেক পার্কের কাজ চলমান রয়েছে। আগামী ৭ বছরের মধ্যে এই সংখ্যা প্রায় একশয় উন্নীত হবে। হাইটেক পার্কের উদ্যোগে রুয়েটে একটি ইনোভেশন হাব’র কাজ চলমান রয়েছে।
বক্তারা বলেন, রুয়েট আন্তর্জাতিক এ সেমিনারের মাধ্যমে গবেষণা ও উন্নয়নে বড় একটি সুযোগ সৃষ্টি হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ও গবেষকরা আরও বেশি গবেষণায় উদ্বুদ্ধ হবে। এর মধ্য দিয়ে পরবর্তী প্রজন্মকে ইনোভেটিভ রিসার্চ ওরিয়েন্ট করে গড়ে তুলতে হবে। আমাদের দেশের ১২ কোটি মানুষের বয়স পঁচিশের নিচে। আমরা তাদের সাপোর্ট চাই। ভবিষ্যতে গুগল, ফেসবুক, মাইক্রোসফটসহ বিশ্বের বড় কোম্পানিগুলোয় দেশের তরুণ প্রজন্ম নেতৃত্ব দেবে বলেও তারা আশা প্রকাশ করেন।
সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য অধ্যাপক ড. মো. সাজ্জাদ হোসেন, বাংলাদেশ হাইটেক পার্কের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) বিকর্ণ কুমার ঘোষ। প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে বক্তব্য দেন রুয়েটের ভাইস-চ্যান্সেলর (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মো. সাজ্জাদ হোসেন। সভাপতিত্ব করেন তড়িৎ ও কম্পিউটার কৌশল অনুষদের ডীন অধ্যাপক ড. মো. নজরুল ইসলাম মণ্ডল।
উপস্থিত ছিলেন ইনস্টিটিউট অব ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ার্স’র (আইইইই) বাংলাদেশ সেকশনের সভাপতি অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মশিউল হক, রুয়েটের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. শহীদ-উজ-জামান, অধ্যাপক ড. বশির আহমেদ, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. মো. শহীদুল ইসলাম প্রমুখ।
দুদিনব্যাপী আন্তর্জাতিক এ সম্মেলনে বিভিন্ন দেশের প্রায় ৪৬৫ জন গবেষক, শিক্ষক, প্রকৌশলী ও প্রযুক্তিবিদ অংশ নেবেন। সম্মেলনে ৬৯টি টেকনিক্যাল পেপার ও ৬টি কি-নোট পেপার উপস্থাপন করা হবে। এছাড়াও চারটি ইনভাইটেড টক, একটি ওয়ার্কশপ অনুষ্ঠিত হবে। সম্মেলনে সেরা তিনটি পেপারকে সম্মাননা স্মারক ও সনদ দেওয়া হবে।
আগামীকাল শনিবার (৩১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় রাজশাহী মহানগরীর সীমান্ত অবকাশে সম্মেলনের পর্দা নামবে।
Array