আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, কাজ করতে গেলে ভুল ত্রুটি হবেই। আই অ্যাম নট পার্ফেক্ট লিডার। আমি মনে করি একেবারে পারফেক্ট হওয়া খুবই অসম্ভব।
শুক্রবার (২৩ ডিসেম্বর) আওয়ামী লীগের ২২তম জাতীয় সম্মেলন উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের এ কথা জানান। বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ভুলত্রুটি তো থাকবেই। সাফল্য আছে, ভু ত্রুটিও আছে। তবে ব্যর্থতা থেকে শিক্ষাও নেব, যেখানে ভুল আছে আমরা সম্মিলিতভাবে আগামীতে চেষ্টাও করব। কে, কোন দায়িত্বে সেটা ব্যাপার না। দায়িত্ব বদলালেও তো আমরা এই দলেই আছি। দলের কাজই করব।
তিনি আরও বলেন, প্যান্ডামিকের জন্য আমরা একটা বছর কাজ করতে পরিনি। এর ভেতরও সহকর্মীরা আমাকে অনেক সহযোগিতা করেছেন, কাজ করেছেন। আমরা নিস্ক্রীয় ছিলাম না। আমি মনে করি স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী এবং বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবাষির্কী উদযাপন আমাদের সব চেয়ে বড় সাফল্য। উপজেলা ও তৃণমূল পর্যায়ে অনেকদিন পর সবচেয়ে বেশি সম্মেলন হয়েছে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আওয়ামী লীগ রুলিং পার্টি, একাধারে ১৪ বছর ক্ষমতায়। রুলিং পার্টির কিছু সমস্যা থাকে। আজ কেউ আছেন, তিনি আবারও থাকতে চাইবেন। আবার নতুন কারো আকাঙ্ক্ষা থাকতে পারে। অনেক সময় দুই আকাঙ্ক্ষার মধ্যে সাংঘর্ষিক হয়ে যায়, সেটাকে কেন্দ্র করে নেতাকর্মীদের মধ্যে একটা প্রতিক্রিয়া থাকে। এই বিষয়টা পৃথিবীর সব দেশেই আছে, আমাদের এখানেও আছে। এসব আছে, ছোট সমস্যা আছে।
দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে একমাত্র আওয়ামী লীগই অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্র চর্চা করে বলেও দাবি করে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সম্মেলনে জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা প্রতিফলিত হয়। বাংলাদেশ একমাত্র আওয়ামী লীগই নিয়মিত সম্মেলনের আয়োজন করে।’
দুই মেয়াদে দায়িত্ব পালন করার সময় সাফল্য-ব্যর্থতা নিয়ে জানতে চাইলে কাদের বলেন, ‘ব্যর্থতা থেকে শিক্ষাও নেব। যেখানে ভুল আছে আমরা সম্মিলিতভাবে আগামীতে চেষ্টাও করব। কে কোন দায়িত্বে, সেটা ব্যাপার না। দায়িত্ব বদলালেও তো আমরা এই দলেই আছি।’
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ তার স্বকীয় ধারায় এগিয়ে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগের প্রতি তরুণ, নারীদের আকর্ষণ আগের চেয়েও বেড়েছে। আগে আমার এলাকায় দশজন নারীকে পাবলিক মিটিংয়ে দেখিনি, এখন শত শত জনকে দেখা যায়। এটা সারা বাংলাদেশে। তরুণদের এখন স্মার্ট বাংলাদেশের প্রতি আকর্ষণ বেড়েছে, তারা ডিজিটাল বাংলাদেশ গ্রহণ করেছে।
আওয়ামী লীগের সম্মেলনের দিন ডাকা বিএনপির গণমিছিল কর্মসূচি পিছিয়ে দেয়া নিয়েও কথা বলেন কাদের।
তিনি বলেন, তাদের শুভবোধের উদয় হয়েছে। কর্মসূচি পিছিয়ে ৩০ ডিসেম্বর নিয়েছে। তবে, তারা তাদের কর্মসূচি থেকে সরে গেছে মনে করার কারণ নেই।
বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে কাদের বলেন, শত সেতু, শত সড়ক উদ্বোধন হয়েছে। মেট্রোরেল, টানেল আসছে। আমাদের রূপপুর, পায়রা এগুলো তাদের মনের জ্বালা বাড়ানোর জন্য যথেষ্ট। যে দল আন্দোলনে ব্যর্থ, সেই দল নির্বাচনেও ব্যর্থ হবে।
তিনি জানান, শনিবার (২৪ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় সম্মেলন শুরু হবে। সম্মেলনের আনুষ্ঠানিকতার শুরুতে জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করবেন সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সম্মেলন মঞ্চে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য, উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য এবং কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যরা বসবেন। বিকেল ৩টায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে দ্বিতীয় অধিবেশন শুরু হবে।
কাদের বলেন, জাতীয় সম্মেলনের মাধ্যমে আমরা দেশের মানুষকে স্বতঃস্ফূর্ত এ বার্তা দিতে চাই, আমরা জনগণের পাশে আছি, পাশে থাকবো। আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার নিয়ে কাজ করবো।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আবুর রাজ্জাক, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, শাজাহান খান, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, কামরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, ড. হাছান মাহমুদ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বিএম মোাজম্মেল হক, সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসিম কুমার উকিল, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আব্দুস সোবহান গোলাপ, শিক্ষা ও মানব সম্পদ উন্নয়ন সম্পাদক শামসুর নাহার চাপা, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান, কেন্দ্রীয় সদস্য পারভীর জামান কল্পনা, সৈয়দ আব্দুল আউয়াল শামীম প্রমুখ।
Array