স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, বিএনপি যদি এখনও শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করতে চায়, তাহলে আমাদের কোনও আপত্তি নেই। বৃহস্পতিবার (০৮ ডিসেম্বর) বিকাল ৪টায় রাজধানীর রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে আহত পুলিশ সদস্যদের দেখতে এসে এসব কথা বলেন তিনি।
এসময় উপস্থিত ছিলেন- পুলিশের মহাপরিদর্শক চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন ও ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুকসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
মন্ত্রী বলেন, তবে বিএনপিকে সমাবেশ করতে হলে অবশ্যই কমিশনার নির্ধারিত স্থানে করতে হবে। আর তারা বিকল্প স্থান চাইলে কালসি মাঠে করতে পারে। সেখানে পুলিশ তাদের সহায়তা করবে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বিএনপি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করবে না। তারা বিকল্প মাঠ চেয়েছিল। আমরা সেটাও করেছি। মিরপুর কালসী মাঠে সমাবেশ করতে পারে।
বুধবার বিএনপিকর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষের সময় পুলিশের ৪৭ সদস্য আহত হয়েছেন। এর মধ্যে ১৬ জন রাজারবাগ হাসপাতালে ভর্তি, একজন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি। আর বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
পরিবেশ পরিস্থিতি যেদিকে যাচ্ছে তাতে অরাজকতা পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে, সাংবাদিকদের এমন এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রাস্তায় কোনও কিছুই করতে দেওয়া হবে না। দেশবাসীও চায় না, আমরাও চাই না। এছাড়া এখানে রাস্তাঘাট বন্ধ করে অরাজকতা পরিস্থিতি সৃষ্টি হোক এটাও আমরা চাই না।
পরিস্থিতি নাজুক হয়ে যাচ্ছে এই অবস্থায় আপনারা সমাবেশ নিষিদ্ধ করবেন কিনা জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, পরিস্থিতি নাজুক হচ্ছে এটা আমরা মনে করি না। পরিস্থিতি সবসময়ই আমাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। আমরা মনে করি বিএনপির মাথায় শুভবুদ্ধির উদয় হোক। তারা নিজেদের একগুঁয়েমি ছেড়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আসুক না হয় কালসী যাক। তারা বিরাট সমাবেশ করুক, আমরাও দেখি। দেশবাসীও দেখুক। সাংবাদিকদের মাধ্যমে তারা দেশবাসীকে জানিয়ে দিক। তারা এখনও আসুক। আমাদের কমিশনারের সঙ্গে বসুক। এই দুই মাঠ ছাড়া যদি তাদের আরও অল্টারনেটিভ থাকে সেটাও তারা বলুক।
ডিএমপি কমিশনারের সঙ্গে যারা বসছেন সমাবেশের জন্য তারা সবাই গ্রেফতার। তাহলে এখন কে বসবে? সরকার কি রাজনৈতিকভাবে বসতে ব্যর্থ হয়ে পুলিশ অপারেশনে গেছে– জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এছাড়া আর কোনও উপায় ছিল কি? যেখানে পুলিশ সদস্যরা মার খাচ্ছিল। এখানে আপনি পুলিশ কর্মকর্তা হলে আপনি কী করতেন।
একটি পার্টি অফিসে পুলিশ যেভাবে হামলা করেছে এটা করতে পারে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, পুলিশ হামলা করেনি। সার্চ করেছে। এছাড়া ভাঙচুরের বিষয়ে বলেন, একটি অফিসে যখন পুলিশ ঢুকে তখন সেখানে তাদেরও সমর্থক থাকে। হয়তো দুয়েকটা ধাক্কা দিয়েছে। সে ক্ষেত্রে একটা পরিস্থিতি হতে পারে।
পুলিশ বিএনপি কার্যালয়ে ককটেল নিয়ে প্রবেশ করেছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, আমার পুলিশ যে আহত হয়েছে, এখানে কয়জন ককটেলের আঘাতে আহত হয়েছেন, সেটা দেখুন। আমার পুলিশ কি সঙ্গে করে ককটেল নিয়ে গিয়ে নিজেরাই মেরে নিজেরাই আহত হয়েছে? সেই প্রশ্ন আপনাদের কাছে।
ককটেলের মতো এমন ছোটখাটো উপকরণ নিয়ে পুলিশের ওপরে হামলা চালালো, তাহলে পুলিশের নিরাপত্তা উপকরণে কোনও ঘাটতি ছিল কিনা, সক্ষমতার ঘাটতি ছিল কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখানে এমন কোনও ঘটনা ঘটেনি, যে ককটেল মারতে হবে। এছাড়া এমন কোনও ঘটনা ঘটেনি যে পুলিশ ওপরে আক্রমণ করতে হবে। পুলিশ সব সময় জনগণের জানমালের নিরাপত্তাই জনগণের পাশে থাকে। পুলিশ আশাই করেনি যে, তাদের ওপরে হামলা হবে। সেই জন্যই তারা যে পরিমাণ প্রোটেকশন পরে যেতে হয়, সেটা নিয়ে যায়নি।
Array