• আজকের পত্রিকা
  • ই-পেপার
  • আর্কাইভ
  • কনভার্টার
  • অ্যাপস
  • পণ্ডিত দিশারী চক্রবর্তী শাস্ত্রীয় যন্ত্রসঙ্গীত শিল্পী 

     S M Dulal 
    08th Dec 2022 11:56 pm  |  অনলাইন সংস্করণ

    আজকালের বার্তা ইরানী বিশ্বাস : মাইহার ধ্রুপদ ঘরানার শাস্ত্রীয় যন্ত্রসঙ্গীত শিল্পী পণ্ডিত দিশারী চক্রবর্তী। তিনি কোলকাতায় জন্মগ্রহণ করলেও তাঁর মায়ের পরিবার অবিভক্ত বাংলাদেশের কুমিল্লার এবং বাবার পরিবার ২০০ বছর আগে নারয়নগঞ্জে বসবাস করতেন। সেই সূত্রে তিনি নিজেকে বাংলাদেশের মানুষ হিসেবে মনে করেন। তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের আতুঁড়ঘর। এখানে জন্মনিয়েছেন বাংলার সব বিখ্যাত পন্ডিতগণ। বাবা আলাউদ্দিন খাঁ এই বাংলাদেশে না জন্মালে আমার হয়তো আজকের আমি হয়ে ওঠা হতো না। আমার গুরুদক্ষীনা হিসেবে বাংলাদেশে আমার শাস্ত্রীয় যন্ত্রশিক্ষা ছড়িয়ে দিতে চাই। যাতে বাংলাদেশ থেকে বাবা আলাউদ্দিন খাঁ সাহেবের নাম কখনো মুছে না যায়। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীতে গত ২৫নভেম্বর থেকে ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত অনুষ্ঠীত শাস্ত্রীয় যন্ত্র সঙ্গীতের উপর প্রশিক্ষণ কর্মশালার মূখ্য প্রশিক্ষক হিসেবে ছিলেন পণ্ডিত দিশারী চক্রবর্তী। তিনি ৭ দিন কর্মশালা শেষে ২ ডিসেম্বর শিক্ষার্থীদের নিয়ে ৩টি ভাগে অর্কেষ্ট্রা পরিবেশনা করান। এসময় উপস্থিত ছিলেন শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক জনাব লিয়াকত আলী লাকী, সঙ্গীত ও নৃত্যকলা বিভাগের পরিচালক জনাব কাজী আফতাব উদ্দিন হাবলু ও সঙ্গীত পরিচালক চন্দন দত্ত। শিক্ষার্থীদের পরিবেশনা দেখে মুগ্ধ হন উপস্থিত দর্শক-শ্রোতা। বাংলাদেশে শাস্ত্রীয় যন্ত্র সঙ্গীতের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে জানতে চাইলে পণ্ডিত দিশারী চক্রবর্তী জানান, বাংলাদেশের জলবায়ু সঙ্গীত সৃষ্টির জন্য অনুকুল। এখানে প্রকৃতি নিজেই প্রতিনিয়ত সঙ্গীত সৃষ্টি করে। আমার শিক্ষার্থীদের অনেকের মধ্যে ব্যাপক সম্ভাবনা দেখেছি।শুধু দরকার সঠিক শিক্ষা এবং দিকনির্দেশনা। তবে একটা বিষয়ে আমি খুবই মর্মাহত তা হলো আমি যে যন্ত্রটা বাজাই, বাংলাদেশে এই যন্ত্র বাজানোর কোন যন্ত্রী নেই। একটা দেশ থেকে একটা যন্ত্র বিলুপ্ত হয়ে গেছে এটা খুবই পীড়া দেয়। আমি চাই কেউ একজন আগ্রহ নিয়ে আসুক আমি তাকে শিখাতে চাই। প্রাচীন কালে শিষ্যগণ গুরুর বাড়িতে থেকে শিক্ষা লাভ করতেন। বর্তমান আধুনিক যুগেও সেই ধারা বজায় রেখে শিক্ষা লাভ করা যেতে পারে এমন ঘটনা বিরল। সেই অভাবনীয় কাজটি করেছেন পণ্ডিত দিশারী চক্রবর্তী। তিনি একাধারে সন্তুর বাদক, সঙ্গীত পরিচালক এবং প্রশিক্ষক। প্রায় ২৮ বছর ধরে বিভিন্ন যন্ত্রসঙ্গীতে প্রশিক্ষন দিচ্ছেন। একই সঙ্গে তিনি সাউন্ড ডিজাইন, মিউজিক কম্পোজিং ইন ফিল্ম, অডিও রেকর্ডিং এন্ড এডিটিং বিষয়ে প্রশিক্ষন দিয়ে থাকেন। পণ্ডিত দিশারী চক্রবর্তী শাস্ত্রীয় সংগীত শিল্পী মা বিদুষী অনন্যা চক্রবর্তীর কাছে সংগীতের উপর প্রথম হাতেখড়ি নেন। মাত্র চার বছর বয়সে বেছে নিয়েছিলেন নিজের পছন্দের বাদ্য যন্ত্র কাশ্মীরি শততন্ত্রী বীণা সন্তুর । মায়ের ইচ্ছায় মাত্র ৬ বছর বয়সে বাবা আলাউদ্দিন খাঁ সাহেবের বাড়িতে অর্থাৎ গুরুগৃহে থেকে ওস্তাদ ধানেশ খাঁ এর কাছে  যন্ত্র সংগীতে মাইহার ঘরানার ধ্রুপদী তালিম শুরু হয়। একটানা ৩০ বছর গুরুগৃহে থেকে কঠোর সাধনার মাধ্যমে সাফল্যের সঙ্গে তালিম শেষ করেন। তিনি শুধু সন্তুরের উপর তালিম নিয়ে থেমে থাকেননি। বিভিন্ন যন্ত্র এবং বিষয়ের উপর শিক্ষা লাভ করেন। ওস্তাদ আলি আকবর খাঁ এর কাছে মাইহার ঘরানার রাবাবি ও বীনকারী অঙ্গে তালিম নেন। ওস্তাদ আশিষ খাঁ এর কাছে সন্তুর ও সরোদ এবং বীনকারী অঙ্গে তালিম নেন। বিদুষী আমিনা পেরিরা এর কাছে সেতার ও রাগ সঙ্গীতের তালিম নেন। পণ্ডিত শঙ্কর ঘোষ এর কাছে তালবাদ্য ও পাখওয়াজ এবং রাগ সঙ্গীতে তালিম নেন।ড. ই.এস পেরিরা এর কাছে উপমহাদেশের শাস্ত্রীয় সঙ্গীতে যন্ত্রের ব্যবহার এবং শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের উপর বিষদ পড়াশুনা করেন। গুরু শ্রী গৌতম গুহ এর কাছে তবলা ও লয়কারীর তালিম নেন। ড. বিনয় ভারতরাম এর কাছে ধ্রুপদী সঙ্গীতের শুদ্ধবানীর কণ্ঠ সঙ্গীতের তালিম নেন। বিদুষী জুবেদা খাঁ এর কাছে বাবা আলাউদ্দিন খাঁ এর দৈনন্দিন তালিম পদ্ধতি ও মাইহার ব্যান্ড(অর্কেষ্ট্রা) এর বিভিন্ন যন্ত্রের ব্যবহার সম্পর্কে বিষদ তালিম নেন। মাত্র ৯ বছর বয়সে প্রথম পাবলিক প্র্রোগ্রামে সন্তুর বাজিয়ে দর্শকদের তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন। কর্ম জীবনে তিনি প্রচুর পুরস্কার পেয়েছেন। তিনি প্রেসিডেন্ট স্কলারশীপ পেয়েছেন (১৯৯২-২০০১), ওস্তাদ আলী আকবর খান (ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টেট মিউজি একাডেমী পুরস্কার- ১৯৯৯), সিসিআরটি এওয়ার্ড অব স্কলারশীপ (মিনিস্ট্রি অব টুরিজম, গভঃ অব ইন্ডিয়া-২০০১), সার্টিফিকেট বাই পদ্মভুষণ অন্যপূর্না দেবী (দ্যা টাইটেল অব সুর ভারতী-২০০৪), সার্টিফিকেট বাই (দ্যা টাইটেল অব সঙ্গীত নন্দন-২০২১) পুরস্কারে ভুষিত হন। মিউজিক ডিরেক্টর এবং সাউন্ড ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে এ পর্যন্ত ১৪ টি পুরস্কার পেয়েছেন। মিউজিক কম্পোজার হিসেবে ৮টি পুরস্কার পেয়েছেন। এ পর্যন্ত ১০০টির অধিক থিয়েটারে ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক করেছেন। তার মধ্যে পুরস্কৃত হয়েছে ৩০টিরও অধিক। তিনি মনে করেন সঙ্গীত বলতে শুধুমাত্র কয়েকটা স-র-গ-ম তাল লয় এবং রাগ-রাগিনী নয়। সঙ্গীত একটা বোধ, চেতনা যা মানুষকে দেয় “সেন্স অফ এসথেটিক্স”। এছাড়া সঙ্গীত সবচেয়ে বেশি শেখায় মানুষের প্রতি মানুষের সহনশীলতা যা বর্তমান সময়ে সমাজে অনেক কম দেখা যায়। সমাজে সঙ্গীত চর্চ যত বাড়বে, তত বেশি শুদ্ধ চেতনার ও মানবিক সমাজ গড়ে উঠবে। শুদ্ধ সঙ্গীত চর্চা করতে হলে শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের চর্চা বাড়াতে হবে। কারণ শাস্ত্রীয় সঙ্গীতকে বলা হয় মাদার অব মিউিজিক। তাই শাস্ত্রীয় সঙ্গীত ছাড়া সঙ্গীত শুদ্ধ হয় না।

    Array
    We use all content from others website just for demo purpose. We suggest to remove all content after building your demo website. And Dont copy our content without our permission.
    আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
    এই বিভাগের আরও খবর
     
    Jugantor Logo
    ফজর ৫:০৫
    জোহর ১১:৪৬
    আসর ৪:০৮
    মাগরিব ৫:১১
    ইশা ৬:২৬
    সূর্যাস্ত: ৫:১১ সূর্যোদয় : ৬:২১

    আর্কাইভ

    December 2022
    M T W T F S S
     1234
    567891011
    12131415161718
    19202122232425
    262728293031