আবারো আর্জেন্টিনা, আবারো লিওনেল মেসি। মেসি বোঝালেন কেন তাকে বিশ্বসেরা খেলোয়াড় বলা হয়, মেসি বোঝালেন কেন তিনি এবারের বিশ্বকাপটি তিনি জিততে এসেছেন। অস্ট্রেলিয়াকে পুরো একক নৈপুণ্য দেখিয়ে আকর্ষণীয় খেলা দেখিয়ে অস্ট্রেলিয়াকে ২-১ ব্যবধানে হারালো আর্জেন্টিনা। উঠে গেল কোয়ার্টার ফাইনালে৷
বিশ্বকাপের গুরুত্বপূর্ণ দ্বিতীয় রাউন্ডের ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথম দিকে খেই হারালেও ধীরে ধীরে প্রাণ ফিরে পায় আর্জেন্টিনা। আর্জেন্টিনার সেই ত্রাতা হয়ে আবারো আবির্ভাব হয় লিওনেল মেসির। তার ঐতিহাসিক ১০০০ তম প্রফেশনাল ম্যাচে গোল করার পাশাপাশি দুর্দান্ত খেলে আর্জেন্টিনাকে তুলেছেন কোয়ার্টার ফাইনালে। আর্জেন্টিনার হয়ে আরেকটি গোল করেন হুলিয়ান আলভারেজ। অস্ট্রেলিয়ার গোলটি আসে আত্মঘাতী গোলে এনজো ফার্নান্দেজের মাধ্যমে।
নিজের প্রফেশনাল ফুটবল ক্যারিয়ারের এক হাজারতম ম্যাচ খেলতে নেমে মেসি আবারো নিজের জাত চেনালেন। শুরু থেকে বল নিজেদের দখলে নিয়ে খেলতে থাকে আর্জেন্টিনা। কিন্তু গোলের তেমন সুযোগ তৈরি করতে পারছিল না মেসিরা। ডি মারিয়ার অভাব হারে হারে টের পাচ্ছিল তারা।
ম্যাচের প্রথম ৩০ মিনিটে কোন শটই কেউ গোলমুখে নিতে পারেনি। ম্যাচের ৩৬ মিনিটের সময় ডি বক্সের বাইরে জটলা থেকে বল পেয়ে ডি বক্সের সামান্য ভেতর থেকে বা পায়ের দারুণ বাকানো শটে গোল করে দল্কে এগিয়ে নেন মেসি।
জাতীয় দলের হয়ে এক হাজারতম ম্যাচে এটি তার ৭৮৯তম গোল। ম্যাচের প্রথমার্ধে আর কোন সুযোগ তৈরি করতে না পারলে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে থেকেই বিরতিতে যায় আর্জেন্টিনা।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই গোলের জন্য মরিয়া হয়ে খেলতে থাকে আলবিসেলেস্তারা। দ্বিতীয়ার্ধের ৫৮ মিনিটে গোল পেয়ে যায় আর্জেন্টিনা। ৫৬ মিনিটে অস্ট্রেলিয়ান গোলরক্ষক টার্নারের ভুলে গোল করে দলকে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে দেন হুলিয়ান আলভারেজ। বিশ্বকাপে এটি তার ২য় এবং আর্জেন্টিনার জার্সি গায়ে ৬ ম্যাচে তার গোলসংখ্যা দাঁড়ালো ছয়ে।
বল দখলে আর্জেন্টিনা মাঝমাঠ পুরোটা দখল রেখে খেলতে থাকে। অস্ট্রেলিয়ানরা অনেক চেষ্টা করেও যেন বারবার খেই হারাচ্ছিল। কিন্তু ৭৮ মিনিটে ভাগ্যগুণে গোল পেয়ে যায় তারা। গুডউইনের ২৫ গজ দূর থেকে নেওয়া শট এনজো ফার্নান্দেজের গায়ে লেগে জালে জড়ালে লাইফ লাইন পায় অস্ট্রেলিয়া।
৮৩ মিনিটে ম্যাচে অজিদের সমতায় ফেরার সহজ সুযোগকে পরাস্ত করে দেন লিসান্দ্রো মার্টিনেজ। বেহিচ মাঝমাঠ থেকে ৪-৫ জনকে কাটিয়ে বল নিয়ে ডি বক্সের ভেতরে গিয়ে শট নিলে মার্টিনেজ দারুণভাবে ট্যাকেল করে দলকে রক্ষা করেন। ৮৯ মিনিটে ম্যাচের সবচেয়ে সহজ সুযোগ মিস করেন লাউতারো মার্টিনেজ। মেসির বাড়ানো বলে গোলপোস্ট পুরো ফাঁকা পেয়েও গোলবারের উপর দিয়ে মারেন তিনি।
ম্যাচের ৯৫ মিনিটে আবারো লাউতারো মার্টিনেজের শট রুখে দেন অজি গোলরক্ষক টার্নার। রিবাউন্ডে মেসি শট নিলে সেটিও চলে যায় গোলবারের বাইরে। ৯৬ মিনিটে নেসি নিজেই গোলবারের শট নেন ডি বক্সের বাইরে থেকে কিন্তু সামান্য বাইরে দিয়ে চলে যায় বল। ম্যাচের একদম অন্তিম মুহূর্তে অস্ট্রেলিয়ার কুওলের শট দুর্দান্তভাবে রুখে দেন আর্জেন্টাইন গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। এই জয়ে কোয়ার্টারে চলে গেল আর্জেন্টিনা।
Array