আত্রাই (নওগাঁ) প্রতিনিধি: নওগাঁর আত্রাইয়ে নিখোঁজের ২১দিন পর নদী থেকে গলিত লাশ উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ। এর আগে শিশুটির বাবার কাছে চিঠি ও মোবাইল ফোনে ৬লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে আসামি।
এ ঘটনায় তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় অভিযুক্ত বুলবুল সোনারকে (৩০) সনাক্ত করে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার দেওয়া তথ্য মতে বৃহস্পতিবার (১ ডিসেম্বর) ভোর রাতে লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। গ্রেপ্তার বুলবুল উপজেলার শ্রীধরগুড়নই গ্রামের আব্দুল জলিল সোনারের ছেলে এবং নিহত শিশু ইব্রাহিম একই গ্রামের হযরত আলীর ছেলে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ‘গত ১০নভেম্বর দুপুরে শিশু ইব্রাহিম (৬) নিখোঁজ হয়। এরপর অনেক খোঁজাখুজি করে সন্ধান না পেয়ে পরের দিন থানায় সাধারণ ডায়েরি করে। এরপর থেকে শিশুর সন্ধানে মাঠে নামে পুলিশ। এরই মধ্যে ৬ লাখ টাকা মুক্তিপন দাবি করে একটি নতুন সিম ও মোবাইল কিনে বাড়ির পার্শ্বে বাবুর চা-স্টলের চুলার মধ্যে রেখে আসতে শিশুর বাবার শয়ন ঘরে একটি চিঠি দেয় ঘাতক। এছাড়া দাবিকৃত টাকা রেডি রাখতে বলা হয়। এরপর গত ২৬ নভেম্বর সকাল ১০টা থেকে মোবাইল ফোন করে মুক্তিপণ দাবি করতে থাকে। এক পর্যায়ে পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তি ও স্থানীয় সোর্সের মাধ্যমে বুলবুলকে সনাক্ত করে ২৭ নভেম্বর আটক করে। ওই দিনই শিশুর বাবা ইব্রাহিম বাদী হয়ে নারীশিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন। মামলার প্রেক্ষিতে থানা পুলিশ বুলবুলকে ১০দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে সোর্পদ করলে আদালত ৪ দিনের রিমান্ড মুঞ্জুর করে।’
পুলিশ জানায়, ‘আসমিকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদে তার দেওয়া তথ্য মতে বৃহস্পতিবার (১ ডিসেম্বর) ভোরে নওগাঁর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) গাজিউর রহমান পিপিএম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) রাকিবুল হাসান ইবনে রহমান ও আত্রাই থানার ওসি তারেকুর রহমান সরকারসহ একটি টিম অভিযান চালিয়ে শ্রীধরগুড়নই নদীতে পুঁতে রাখা গলিত লাশ উদ্ধার করে।’
পুলিশ আরও জানায়, ‘গ্রেপ্তার বুলবুল স্থানীয় একটি মাদ্রাসার খণ্ডকালীন শিক্ষক এবং পাশাপাশি গ্রামে মুদি ও চা-দোকান দিয়ে ব্যবসা করে আসছিল। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বুলবুল পুলিশকে জানায়, “ঘটনার দিন শিশু ইব্রাহিম দোকানের ৫/৬টি বেলুন ফাটায়। তাকে চলে যেতে বললেও চলে না যাওয়ায় গলা টিপে হত্যা করে চা-স্টলের পাশে ছাইয়ের মধ্যে লাশ পুতে রাখে। এরপর সেখান থেকে গন্ধ বের হতে থাকলে গত ১৭/১৮ নভেম্বর নাগাদ অর্ধগলিত লাশ বালতিতে তুলে নদীর মধ্যে পুতে রাখে এবং লাশ যেন ভেসে না ওঠে সে জন্য বড় কংক্রিট দিয়ে চাঁপা দিয়ে রাখে।” এ ঘটনায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদানের জন্য বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হবে বলে জানানো হয়।
আত্রাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তারেকুর রহমান সরকার বলেন, ‘লাশ ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া ঘটনাটি সুষ্ঠুভাবে তদন্ত করা হচ্ছে।’
Array