- স্টাফ রিপোর্টার/
আদালতের নির্দেশ অমান্য করে সাভারে একটি জমিতে ‘জোরপূর্বক’ নির্মাণকাজ চালানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে।
রোববার (২৭ নভেম্বর) বিকেলে পৌরসভার ব্যাংক কলোনি কলেজ রোডের তালবাগ এলাকায় এ নির্মাণকাজ চলমান থাকতে দেখা যায়। ২১ নভেম্বর থেকে এ কাজ শুরু হয়। বিষয়টি থানা পুলিশকে জানানো হয়েছে।
জানা গেছে, সাভার উপজেলার ছোট বলিমেহের মৌজার সিএস ও এসএ ৬৩ নং দাগের আরএস ১৬৯ এর ৩৫৩৮ নং দাগের ৪.৩৩ শতাংশ জমি নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ চলছে। সম্প্রতি ক্রয় সূত্রে ওই সম্পত্তির দাবিদার রফিকুল ইসলাম ঢাকা জেলা অতিরিক্ত ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পিটিশন মামলা (২৩১/২০২২) দায়ের করেন। গত ২২ আগস্ট ঢাকা জেলা অতিরিক্ত ম্যাজিস্ট্রেট মোছা. নাজমা নাহারের আদালত ওই সম্পত্তিতে শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখার নির্দেশ দেন ও পরবর্তী নির্দেশ না পাওয়া পর্যন্ত যার যার অবস্থানে থাকতে বলেন। জমিটির বিষয়ে শুনানির জন্য সকল কাগজপত্রসহ আগামী ২৬ ডিসেম্বরে (২০২২) আদালতে দুই পক্ষকে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
এদিকে ২১ নভেম্বর সকালের দিকে বিবাদী মো. মাসুম প্রায় ১০-১২ জন লোকসহ ওই জমিতে জোরপূর্বক নির্মাণকাজ শুরু করেন। পরে সেখানে এসে বাধা দেন রফিকুল ইসলাম। এতে কাজ বন্ধ না করায় তিনি পুলিশে খবর দেন। পুলিশ এসে তাদের সরে যেতে বললেও বিবাদীরা নির্মাণ কাজ চালিয়ে যেতে থাকে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় বুধবার (২৩ নভেম্বর) সাভার মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেন বাদী রফিকুল ইসলাম।
বাদী রফিকুল ইসলাম ধামরাইয়ের কায়েতপাড়া এলাকায় মৃত আব্দুল মান্নানের ছেলে। বিবাদীরা হলেন, ধামরাই উপজেলার কায়েতপাড়া এলাকার মৃত নাজির হোসেনের ছেলে আজিজুর রহমান পলাশ (৩৫) ও মেয়ে নাজমা আক্তার শিল্পী (৩০), ফরিদা ইয়াসমিন শিউলি (২৫) এবং মো. মাসুম (৩৮)। মাসুম ধামরাই উপজেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক।
এদিকে রফিকুল ইসলাম জমিটি সাভার পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের তালবাগ এলাকার বাসিন্দা এসএম জাহেরুল আহসান ও মনির হোসেনের কাছে বিক্রি করেছেন। তবে বিরোধ থাকায় জমিটিতে যেতে পারছেন না নতুন মালিকরা।
জমি মালিক এসএম জাহেরুল আহসান বলেন, ‘জমিটির রেকর্ডকৃত মালিক রফিকুল ইসলামের কাছ থেকে জমিটি কিনেছি আমি। সব কাগজপত্রও আছে, সেগুলো আদালতকে দেখিয়েছি। তবুও বিবাদীরা দখল চেষ্টা করায় আমরা আদালতে মামলা করি। মামলাটি তদন্ত চলছে ও পরবর্তী শুনানির আগ পর্যন্ত বর্তমান অবস্থায়ই থাকার কথা। কিন্তু বিবাদীরা আরও ১০-১২ জনকে নিয়ে আজ সকালে নির্মাণসামগ্রী এনে কাজ শুরু করে। এতে বাধা দিতে গেলে তারা আমাকে হত্যার হুমকি দেয়। পরে আমি থানা পুলিশে খবর দেই। পুলিশ এসে নিষেধ করলেও তারা সেটা মানেনি। তারা আইন আদালত কিছুই মানছে না।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিবাদী মো. মাসুম আদালতের কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই বলে দাবি করেন। তিনি বলেন, ‘ওই জমি আমাদের। আমরা সেখানে কাজ করছি। তারাই বরং দখল করে রেখেছে। মামলা করেছে। আমরা আমাদের জমিতে কাজ করতে গেলে তারা বাধা দেয়। আজকেও পুলিশ এনেছিল। যেহেতু নিষেধ নেই তাই আমরা কাজ চালাচ্ছি।’
এ বিষয়ে সাভার থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি) নয়ন কারকুন বলেন, ‘জমির বিষয়টি নিয়ে বিবাদী পক্ষকে কাজ বিরত রাখতে বলা হয়েছে। এটি আদালতে বিচারাধীন। এই ব্যাপারে দুই পক্ষকেই রাতে থানায় ডাকা হয়েছে। বিষয়টিতে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
Array