নিজস্ব প্রতিবেদক /
আশুলিয়ার ইয়ারপুর ইউনিয়নের আসন্ন উপ-নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন পেতে প্রায় ৫ থেকে ৭ জন প্রার্থী দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন।
তাদের মধ্যে পাল্লা দিয়ে নৌকার মনোনয়ন পেতে মরিয়া মাদকব্যবসা নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখা নেতা, মামলার আসামি ও বিএনপি থেকে অনুপ্রবেশকারীরাও। যেখানে, মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সরকার।
তবে, নৌকার মনোনয়নে প্রাথমিকভাবে ৫ জনের নামের সুপারিশ করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২২ নভেম্বর) স্থানীয় সংসদ সদস্য ডা. এনামুর রহমানের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত বর্ধিত সভায় ৫ জনের নাম সুপারিশ করেন স্থানীয় আওয়ামী নেতারা। তাদের মধ্যে তিনজনই নাশকতা, হত্যা, জমিদখল, মাদক ব্যবসায়ী পরিবাবের সদস্য এবং বিএনপি থেকে অনুপ্রবেশকারী।
অনুসন্ধানে জানা যায়, উপ-নির্বাচনে নৌকার মনোনয়ন প্রত্যাশী ও ইয়ারপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন মুসাইয়ারপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন মুসা ইছরকান্দি এলাকার অবৈধ মাদক চোরাকারবারের শীর্ষ তালিকাভুক্ত পৃষ্ঠপোষক ও মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রক।
অভিযোগ রয়েছে তার আপন বড় ভাই আজিজুর রহমান আজি ও শ্বশুর গেদা মেম্বারের (কডা মেম্বার) মাধ্যমে এলাকা মাদকের রাজ্যে পরিনত করেছেন। তারা দুজনই পেশাদার মাদক ব্যবসায়ী বলে জানা গেছে। তার বাবা আব্দুল মান্নান মোল্লা ছিলেন বিএনপির নেতা। এক সময় পারিবারিকভাবে বিএনপির রাজনীতির সাথে যুক্ত থাকলেও পরবর্তীতে আশুলিয়া থানা আওয়ামী লীগের কতিপয় নেতার সঙ্গে সখ্যতা তৈরি করে আওয়ামী লীগের যোগদান করেন মুসা। পরে এই বিতর্কিত মুসাকেই করা হয় ইয়ারপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। নৌকার মনোনয়নে তার নাম রয়েছে প্রথম স্থানে।
মুসার সম্পর্কে তার আপন ভাতিজা সোহেল মোল্লা বলেন, মোশাররফ হোসেন মুসা ও আজিজুর রহমান আজি আমার আপন চাচা। আমি সর্বদা ন্যায়ের সাথে চলি। আজিজুর চাচা মাদক ব্যবসার সাথে সম্পৃক্ত হলেও পুরো ব্যবসা মুলত নিয়ন্ত্রণ করেন মুসা চাচা। আমি নানাভাবে এসব থেকে তাদের বিরত থাকার জন্য বললে আমার নিজেরই জমি দখল করে আমাকে নানাভাবে হুমকি প্রদান করেন। তাই মাদকসহ আমার চাচা আজিজুর রহমান গ্রেপ্তার হলেও কোন খোঁজ খবর রাখিনি। এখন আমি আমার মতো চলি।
তাদের পরিবার বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই এলাকার কে আওয়ামী লীগ ছিল? সবাই তো বিএনপিই করতো। আমার দাদারাও করেছে। তাই বলে আমরা আওয়ামী লীগ করতে পারবো না? আমার চাচা বর্তমানে এই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। আমি নিজেও যুবলীগের সঙ্গে রয়েছি। এটা কোন অপরাধ মনে করি না। তবে মাদক ব্যবসা গুরুতর অপরাধ।
তবে এব্যাপারে মোশাররফ হোসেন মুসা বলেন, বর্তমানে আমার বিরুদ্ধে কোন মামলা নেই। আর আমার ভাই মাদক ব্যবসায়ী কিনা তাকে জিজ্ঞেস করেন। এসব বিষয়ে আমি কিছু জানি না— বলেই তিনি মুঠোফোনের লাইন কেটে দেন।
এদিকে সাভার উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও আশুলিয়া থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি দেওয়ান মেহেদী মাসুদ মঞ্জু এবং ইয়ারপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও বর্তমান থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অধ্যক্ষ আব্দুল কাদির দেওয়ানের বিরুদ্ধে তেমন কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি। এ ছাড়া অপর দুই জনের বিরুদ্ধেও রয়েছে নানা অভিযোগ।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে আশুলিয়া থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফারুক হাসান তুহিন বলেন, উপ-নির্বাচনে তার দল থেকে অনেকেই প্রার্থী হয়ে চাইছেন নৌকার প্রতীক। সে কারণে যারাই মনোয়ন প্রত্যাশী সকলের নামই সুপারিশ করে পাঠানো হবে। এখানে তার হাতে কিছুই নেই। মনোনয়ন বোর্ডের সভাপতি যাকে যোগ্য মনে করবে তাকেই নৌকার প্রতীক দিবেন।
এছাড়াও একাধিক মামলা, জমি দখল, মাদক সংশ্লিষ্টে থাকা ও বিএনপি থেকে অনুপ্রবেশকারীদের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, যারাই প্রার্থী হয়েছেন সকলের ব্যাপারেই তথ্য আছে সিনিয়র নেতাদের কাছে। এবিষয়ে তারাই সিদ্ধান্ত নিবেন।
Array