- জেলা প্রতিনিধি, নড়াইল
নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার আওয়ামী লীগ সদস্য ও ৩নং শালনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. লাবু মিয়ার মাদক সেবনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ার পর তীব্র সমালোচনা শুরু হয়েছে। অনেকেই তার পদত্যাগ ও শাস্তি দাবি করছেন।
যদিও ইউপি চেয়ারম্যান বলছেন, সুপার এডিট করে তাকে বেকায়দায় ফেলার ষড়যন্ত্র করছে প্রতিপক্ষ।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার (২২ নভেম্বর) দুপুরের পর থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের বিভিন্ন আইডি, গ্রুপ ও ইউটিউবে শালনগর ইউপি চেয়ারম্যান লাবু মিয়ার মাদক সেবনের ভিডিওটি দেখা যায়। তবে কে এ ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রথম আপলোড করেছে তা জানা যায়নি।
ভিডিও তে দেখা যায়, সাদা পাঞ্জাবি পরা চেয়ারম্যান লাবু মিয়া মাদক সেবন করছেন। তার সঙ্গে সঙ্গ দিচ্ছেন আরও কয়েকজন। তবে ভিডিওতে চেয়ারম্যান ব্যতীত কারো চেহারা দৃশ্যমান নয়।
এদিকে ভিডিওটি ফেসবুকে পোস্ট করে তার ক্যাপশনে কেউ কেউ লিখেছেন, ‘যুবকদের মাদক থেকে দূরে রাখতে নিজেই ইউনিয়নের সকল ইয়াবা খেয়ে শেষ করছেন মাদক ব্যবসায়ী মো. লাবু মিয়া, চেয়ারম্যান ৩ নং শালনগর ইউনিয়ন, লোহাগড়া, নড়াইল।
এ বিষয়ে শালনগর ইউপি চেয়ারম্যান লাবু মিয়া বলেন, আমি শুনেছি আমাকে নিয়ে একটা ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। আমি কোনো প্রকার মাদক সেবন করি না। আমার সম্মান নষ্ট করতে প্রতিপক্ষরা এডিট করে আমার ছবি দিয়ে ভিডিও বানিয়েছে। আমি সুনামের সঙ্গে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছি যা অনেকের পছন্দ নয়। তাই আমাকে নিয়ে এমন ষড়যন্ত্র করে ভিডিও ছাড়া হচ্ছে, যাতে আমি বেকায়দায় পড়ি।
লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নাসির উদ্দিন বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটি ইতোমধ্যে আমাদের নজরে এসেছে। ভিডিওটিতে শালনগর ইউপি চেয়ারম্যান মতো একজন ব্যক্তির উপস্থিতি দৃশ্যমান। যেহেতু তিনি একজন জনপ্রতিনিধি, তার বিষয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে যে নির্দেশনা আসবে আমরা সেভাবে পরবর্তী পদক্ষেপ নেব।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সুবাস চন্দ্র বোস বলেন, দলীয় সদস্য ও চেয়ারম্যান যদি মাদকাসক্ত হয় আর এটার প্রমাণ পাওয়া যায় তাহলে অবশ্যই সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে লোহাগড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আজগর আলী বলেন, এ ধরনের ঘটনা কোনোভাবেই কাম্য নয়, একজন জনপ্রতিনিধি মাদক সেবন, মাদক ব্যবসা বা এ সংক্রান্ত কোন বিষয়ে জড়িত থাকা খুবই দুঃখজনক। ভিডিওতে যা দেখা গেছে সেক্ষেত্রে তার কাছে তাৎক্ষণিকভাবে জেলা প্রশাসকের নির্দেশে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। নোটিশে তিন কার্যদিবসের মধ্যে তার ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে।
পরে তার বক্তব্য ও অন্যান্য ডকুমেন্টস পর্যালোচনা করে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্থানীয় সরকার বিভাগে পাঠানো হবে। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মোতাবেক পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Array