লেটে শনিবার বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ উপলক্ষে রাত থেকেই সমাবেশস্থলে এসে অবস্থান নিয়েছেন দলটির নেতাকর্মীরা
সিলেটে বিভাগীয় গণসমাবেশে আসা বিএনপির নেতাকর্মী ও সমর্থকদের পথে পথে পুলিশ বাধা দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন দলটির নেতারা। তবে পুলিশের দাবি, শহরে ঢুকতে কাউকে বাধা দেওয়া হচ্ছে না।
সিলেট-ঢাকা মহাসড়ক, সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়ক, সিলেট-তামাবিল আঞ্চলিক মহাসড়ক, সিলেট-গোলাপগঞ্জ সড়ক, সিলেট-ঢাকা সড়ক, সিলেট-কোম্পানীগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়ক দিয়ে সিলেট শহরে ঢুকতে হয়।
সমাবেশে যোগ দিতে সিলেটে আসা বিএনপির একাধিক নেতা-কর্মী গণমাধ্যমকে বলেন, এ ছয় সড়কের বিভিন্ন স্থানে পুলিশ তল্লাশিচৌকি বসিয়েছে। এসব সড়কে চলাচলকারী সিলেটমুখী ব্যক্তিদের পুলিশ উল্টো পথে ফিরিয়ে দিচ্ছে।
সুনামগঞ্জ থেকে সিলেটে আসা আমির উদ্দিন (৫৪) নামের এক বিএনপির কর্মী বলেন, সুনামগঞ্জে আজ শুক্রবার থেকে দুই দিনের পরিবহন ধর্মঘট শুরু হয়েছে। ফলে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। এ অবস্থায় সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে সিলেটে রওনা দিয়েছিলেন। তবে পথে পুলিশ অটোরিকশা থামিয়ে দেয়। এরপর ছয়বার যানবাহন বদলে সিলেটে এসেছেন। এভাবে দেড় ঘণ্টার পথ আসতে লেগেছে সাড়ে চার ঘণ্টা।
বিএনপির নেতা–কর্মীদের অভিযোগের বিষয়ে কথা বলতে সিলেট রেঞ্জের পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মফিজ উদ্দিন আহম্মেদ এবং সিলেটের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মামুনকে একাধিকবার কল করা হলেও তারা ধরেননি।
তবে সিলেটের পুলিশ কমিশনার মো. নিশারুল আরিফ বলেন, পুলিশ যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ও নাশকতা এড়াতে তল্লাশিচৌকি বসিয়েছে। তবে কাউকে সিলেট শহরে ঢুকতে বাধা দেওয়া হচ্ছে না। সার্বিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ কাজ করছে।
সিলেট জেলা বিএনপির দুজন নেতার অভিযোগ, সিলেট-তামাবিল সড়কের দরবস্ত এলাকায় এবং সিলেট-গোলাপগঞ্জ সড়কের হেতিমগঞ্জ এলাকায় বিএনপির অসংখ্য নেতা-কর্মীকে পুলিশ ফিরিয়ে দিয়েছে। তারা বাস ও অটোরিকশায় করে সিলেটে আসছিলেন। এ ছাড়া সুনামগঞ্জ থেকে সুরমা নদী দিয়ে নৌকায় করে আসার পথে সিলেট নগরের কানিশাইল এলাকায় বিএনপির নেতা-কর্মীদের শহরে ঢুকতে বাধা দিয়েছেন সরকারি দলের নেতারা।
কোনো বাধাবিপত্তিই জনস্রোত ঠেকাতে পারবে না বলে মন্তব্য করেছেন সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, পুলিশ সিলেটমুখী সড়কগুলোয় চলাচলে বাধা দিচ্ছে। ফলে অনেক নেতা-কর্মী আসতে পারছেন না। তবে সমাবেশ শুরুর এক দিন আগে আজ সমাবেশস্থল মানুষে পরিপূর্ণ হয়ে গেছে। আগামীকাল শনিবার পুরো সিলেট শহর সমাবেশের নগরে পরিণত হবে।
সিলেট মহানগর পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মহানগরের ৬টি থানা এলাকায় আজ ১২টি তল্লাশিচৌকি বসানো হয়েছে। আগামীকাল তা বেড়ে ১৯টি হবে। এদিকে সিলেট রেঞ্জের পুলিশের উপমহাপরিদর্শক কার্যালয়ের একটি সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, মহানগর ছাড়াও সিলেট বিভাগের ৪ জেলায় কমপক্ষে ২০টি তল্লাশিচৌকি বসানো হয়েছে।
বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার আবদুল মুক্তাদির বলেন, ‘বিএনপির অনেক নেতা-কর্মী আমাদের মুঠোফোনে জানাচ্ছেন, তাদের আসার পথে বিভিন্ন স্থানে বাধা দেওয়া হচ্ছে। তবে গাড়ি বদলে বাধাবিপত্তি ঠেলে অনেকে ঠিকই শহরে পৌঁছেছেন।’ এরই মধ্যে অন্তত দুই লাখ মানুষ গণসমাবেশে যোগ দিতে সিলেট শহরে এসেছেন বলে তিনি দাবি করেন।
Array