এতে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. গনেশ চন্দ্র সাহা, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক মো. রফিকুল ইসলাম। আরও উপস্থিত ছিলেন ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মিলি রহমান এবং প্রভাষক নাহিদ খান সৈকত, সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান ও সহযোগী অধ্যাপক আব্দুর রহিম মোল্লাসহ সব বিভাগের শিক্ষকরা।
বিভাগের শিক্ষার্থীদের সহযোগিতায় নাটকটির নির্দেশনা দিয়েছেন বিভাগের স্নাতকোত্তর ২য় সেমিস্টারের শিক্ষার্থী মাসউদ আহমেদ। নাটকটির সমন্বয়ের দায়িত্বে ছিলেন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মিলি রহমান এবং প্রভাষক নাহিদ খান সৈকত।
শেক্সপিয়ার রচিত অন্যতম জনপ্রিয় ও সারা বিশ্বের অভিনীত কমেডি নাটক ‘এ মিডসামার নাইট’স ড্রিম’। এথেন্সের ডিউক থিসিয়াস ও আমাজনের রানী হিপোলিটার বিবাহের পারিপার্শ্বিক ঘটনা অবলম্বনে এই নাটক রচিত। নাটকে দুই প্রণয়ী যুগল ও একদল শখের অভিনেতার অ্যাডভেঞ্চার প্রদর্শিত হয়েছে।
নাটকটিতে অভিনয় করেছেন— জামিল, রিমা, সায়মন, জাহিদ,আয়াত, পুন্য, রোহান, নবাব, সাকিব, ন্যান্সি, রিয়া, ওয়াহিদ, আবির, রাহাত, শাওন, স্বজন, রাসেল, নূরনবী, মুক্তা, শোভা, মিথিলা, আয়েশা, নির্জনা, শুখতারা প্রমুখ।
নাটকটিতে দেখা যায়, হার্মিয়া নামের এক যুবতীকে তার পিতা দিমেত্রিয়াস নামের এক যুবকের সঙ্গে বিয়ে দিতে চায়। কিন্তু হার্মিয়া ভালোবাসে লাইসান্ডারকে। লাইসান্ডার ও হার্মিয়া সিদ্ধান্ত নেয় দূরে কোথাও পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করবে তারা। কিন্তু সে ঘটনা ফাঁস হয়ে যায়। অন্যদিকে পরী রাজ্যের রাজা ওবেরন ও রানী টিটানিয়া একটি ভারতীয় বালককে কেন্দ্র করে ঝগড়ায় মত্ত হয়। ওবেরন রানী টিটিয়ার কথায় ক্ষুব্ধ হয় এবং রানীকে উপযুক্ত জবাব দেওয়ার পরিকল্পনা করে।
ওবেরন তার অনুচর পাককে একটি শ্বেতশুভ্র ফুল এনে দিতে বলে যে ফুলের নির্যাস ঘুমন্ত কারো চোখে এক ফোঁটা ঢেলে দিলেই ঘুম হতে জেগে ওঠে সে যাকে দেখবে তারই প্রেমে পড়ে যাবে। শ্রমিক দল জঙ্গলে নাটকের মহড়া দিতে এসেছে। পাক ইতোপূর্বে জাদুবলে বটমের মাথাকে গাধার মাথাতে পরিণত করে দেয়। টিটানিয়া গাধারূপী বটমকে দেখেই ভালোবেসে ফেলে। এদিকে লাইসেন্ডার ঘুম থেকে জেগে হার্মিয়াকে ভুলে হেলেনাকে প্রেম নিবেদন করে। পরী রাজা ওবেরনের নির্দেশে পাক সবার দৃষ্টি থেকে মোহজাল সরিয়ে দেয়।
অবশেষে মোহভঙ্গ ঘটে সবার। রাজা থিসিয়াস ও রানী হিপোলিটার বিবাহ অনুষ্ঠানে যোগ দেয় এবং একসঙ্গে শ্রমিক দলের নাটক উপভোগ করে। এমন ত্রিমুখী প্রেমের সংঘর্ষে সৃষ্টি হয় দারুণ এক হাস্যরসাত্মক পরিস্থিতি যা ‘এ মিডসামার নাইটস ড্রিম’ নাটকের মূল দিক।
নাটকটির মঞ্চ পরিকল্পনা করেছেন বিভাগের শিক্ষার্থী আব্দুল কাইয়ুম। আলোক প্রক্ষেপণে ছিলেন রেজওয়ানা করিম সারা এবং মিউজিকে নাহিদ সৈকত ও রেশমি। পোশাক পরিকল্পনা ও অঙ্গরচনা তত্ত্বাবধায়ন করেছেন ফারিয়া শর্মিষ্ঠা ও রাফি। নাচের কোরিওগ্রাফি তত্ত্বাবধায়নে ছিলেন রিমি রফিক, মুদ্রণ ও প্রকাশনায় সজীব হাসান, রিফাত। সাজসরঞ্জামে রিয়াজ, কাশেম। শব্দ সংযোজনায় শাকিল আহমেদ ও মাসউদ। হল ব্যবস্থাপনায় নাহিদ, তুলি, মাফিন, ইলমা ও হ্যাপি। সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন বিভাগের চেয়ারম্যান জুবায়ের আল আহমেদ ও শিক্ষকরা।
নাটক প্রসঙ্গে নির্দেশক মাসউদ আহমেদ বলেন, ইংরেজি বিভাগের প্রথম পূর্ণাঙ্গ প্রযোজনায় উইলিয়াম শেক্সপিয়ার রচিত ‘এ মিডসামার নাইটস ড্রিম’। নাটকটি সম্পূর্ণ ইংরেজি ভাষায় উপস্থাপন করা হয়েছে। এই নাটক নির্মাণের ক্ষেত্রে ক্লাসিকের গুরুত্ব অক্ষুণ্ণ রেখে সমসাময়িক বিষয়কে যুক্ত করার চেষ্টা করা হয়েছে। ‘কমেডি’ খুব সহজভাবে হাস্যরসের মধ্য দিয়ে জীবনের অসঙ্গতিগুলোকে সমাজের সামনে প্রকাশ করে। নাটকের কল্পকাহিনির মূল বিষয় হলো হাস্যরস এবং প্রেম। প্রেম যেন একটি শৃঙ্খলাবিহীন হাস্যকর বিষয়। প্রেমে পরা মানুষ অতি সহজেই জীবনের ভিন্ন ভিন্ন চরিত্রে পরিণত হয়।
তিনি আরও বলেন, এই নাটকের প্রতিটি চরিত্রই যেন স্বপ্নের ঘোরের মাঝে বসবাস করে। এ যেন জগৎ নয়, দর্শন করা কোনো পরী রাজ্যের বিচরণ। বটমের ভাষায়- ‘Love and reason can’t live together’ অর্থাৎ প্রেম আর যুক্তির সহাবস্থানের ক্ষেত্রে যে প্রশ্ন উত্থাপিত হয় এই নাটকে তার উত্তর খোঁজার চেষ্টা করেছে কলাকুশলীরা। এই সংকটময় জটিল জীবনে প্রেমের জটিলতা যে হাস্যরস তৈরি করে তা দর্শক মনকে প্রফুল্ল করেছে এই আশাবাদ ব্যক্ত করছি।