প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আজকাল বিরোধী দল থেকে প্রশ্ন করা হয় রিজার্ভের টাকা গেলো কোথায়, সারাদেশে অপপ্রচার করে। বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল তখন রিজার্ভ ছিল ২ দশমিক ৯ বিলিয়ন ইউএস ডলার। পাঁচ বছর ক্ষমতায় ছিল তারা, এসময় রিজার্ভ ৫ বিলিয়নের মতো বৃদ্ধি পেয়েছিল। আমরা সেই রিজার্ভ ৪৮ বিলিয়নে পৌঁছাই।
তিনি বলেন, খাদ্যশস্য, জ্বালানি তেলসহ এখনও অনেক পণ্য আমদানি করতে হচ্ছে। যা কিছু আমদানি করতে হচ্ছে সব কিছুর দাম বেড়ে গেছে। তিনি বলেন, রিজার্ভ যা খরচ করেছি জনগণের কল্যাণে, জনগণের মঙ্গলে।
আজ শনিবার (১২ নভেম্বর) ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে’র উদ্বোধনের সময় তিনি এই কথা বলেন। গণভবনে এক অনুষ্ঠান থেকে প্রায় ১৭ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ২৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, করোনার আঘাত, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দা তৈরি হয়েছে। আমাদের অর্থনীতিতেও প্রভাব পড়েছে। মনে রাখতে হবে, আমরা করোনার ভ্যাকসিন কিনে এনেছি। বিনাপয়সায় টেস্ট করিয়েছি, টিকা দিয়েছে। কোনও উন্নত দেশও বিনা পয়সায় টেস্ট করেনি, ভ্যাকসিনও দেয়নি।
সরকারপ্রধান বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার একটা টাকাও অপচয় করে না, বরং সব টাকা জনগণের কল্যাণে খরচ করে।
রিজার্ভের অর্থ থেকে বিমান কেনা হয়েছে, নদীতে ড্রেজিং করা হয়েছে, উন্নয়ন প্রকল্পে বিনিয়োগ করা হয়েছে বলে জানান সরকারপ্রধান। তিনি বলেন, অন্য দেশের ডলার আনলে সুদ দিতে হয়। নিজেদের দেশে বিনিয়োগ করলে দেশের টাকা দেশই থাকে। পয়সা কেউ তুলে নিয়ে চলে যায়নি।
দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থায় উন্নয়নের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আজ সকাল সাড়ে ৭টায় ফোন পেলাম। বললো, আপা আপনার জন্য ইলিশ পাঠিয়েছি। সাড়ে ৭টায় ম্যাসেজ পেলাম, সাড়ে ৯টায় ইলিশ চলে আসলো। এটা হলো সড়ক যোগাযোগটা সহজ হওয়া কারণে।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, বিএনপি নিজেরা চুরি করে অর্থ সম্পদ বানিয়েছে। জিয়া মারা যাওয়ার সময় একটা সুটকেস ছাড়া কিছু রেখে যায়নি। পরে দেখি হাজার হাজার কোটি টাকা। মানি লন্ডারিং মামলায় তারেক রহমানের সাত বছরের সাজা হয়েছে, তাদের মুখে সমালোচনা মানায় না বলে এসময় তিনি উল্লেখ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত ১৩ বছরের মধ্যে বাংলাদেশ বদলে গেছে। একটি মানুষও গৃহহীন, ভূমিহীন থাকবে না আমরা বলেছি। যত টাকা, সব আমরা মানুষের কল্যাণে খরচ করছি। করোনায় সহায়তা দিয়েছি। প্রণোদনা দিয়েছি। মালিকদের হাতে না দিয়ে মোবাইলের মাধ্যমে সরাসরি শ্রমিকদের হাতে দিয়েছি। কৃষকদের ভর্তুকি দিচ্ছি। মানুষের কল্যাণই আমাদের লক্ষ্য। সেই লক্ষ্যেই এগিয়ে চলেছি।
আসন্ন বৈশ্বিক সংকট মোকাবিলায় পদক্ষেপ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নিজেদের ফসল উৎপাদন করতে হবে, খাদ্য উৎপাদন করতে হবে। প্রতিটি বক্তৃতায় একথা বলি। পৃথিবীর কোথাও দুর্ভিক্ষ হলেও বাংলাদেশে যেন ধাক্কা না লাগে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে করে দিচ্ছি চলাচল ও পরিবহন সহজ হয় যাতে। নৌ, সড়ক, আকাশপথ সহজ করেছি। এগুলো আকাশ থেকে পড়েনি। উন্নয়ন অগ্রযাত্রা অব্যাহত রেখে এগিয়ে যেতে হবে।
উল্লেখ্য, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে শুরু করে আব্দুল্লাহপুর-আশুলিয়া-বাইপাইল হয়ে নবীনগর মোড় এবং ইপিজেড হয়ে চন্দ্রা মোড় পর্যন্ত ২৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ করা হবে। ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে শীর্ষক এই প্রকল্প ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের সঙ্গে সংযুক্ত হবে। এটি বাস্তবায়িত হলে ঢাকার সঙ্গে ৩০টি জেলার সংযোগ স্থাপনকারী আব্দুল্লাহপুর-আশুলিয়া ও বাইপাইল-চন্দ্রা করিডোরে যানজট অনেকাংশে কমবে।
প্রকল্পের আওতায় সাভার ইপিজেড থেকে নবীনগর সড়কে তিন কিলোমিটার দীর্ঘ দুটি সেতু নির্মাণ করা হবে। প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ১৬ হাজার ৯০০ কোটি টাকা। চীনের সহায়তায় প্রকল্পটি পরিচালিত হবে।
Array