ফরিদপুরে মহাসড়কে থ্রি হুইলার বন্ধের দাবিতে শুরু হয়েছে জেলা মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের ডাকা ৩৮ ঘণ্টার পরিবহন ধর্মঘট। আজ শুক্রবার (১১ নভেম্বর) ভোর ৬টা থেকে শুরু হওয়া এ ধর্মঘট চলবে শনিবার রাত ৮টা পর্যন্ত। বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, আগামীকাল শনিবার (১২ নভেম্বর) ফরিদপুরে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশকে সামনে রেখে সরকার ও প্রশাসনের ইন্ধনে এই বাস ধর্মঘট ডাকা হয়েছে।
ধর্মঘটের প্রথম দিনেই চরম দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা। আজ সকাল আটটা থেকে সাড়ে নয়টা পর্যন্ত ফরিদপুর শহরের পুরাতন বাসস্ট্যান্ড, নতুন বাসস্ট্যান্ড এবং ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এলাকা ঘুরে যাত্রীদের যানবাহনের জন্য অপেক্ষা করতে দেখা গেছে।
ফরিদপুর মেডিকেল কলেজের সামনে মাদারীপুরের উপজেলার রাজৈর এলাকার সুমাইয়া ইসলাম বলেন, তাঁর মা ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছিলেন। এ জন্য মাকে নিয়ে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসেছিলেন। বাড়িতে ফেরার জন্য বের হয়ে দেখেন বাস ধর্মঘট চলছে। ফরিদপুর থেকে টেকেরহাটের ভাড়া ১০০ টাকা। কিন্তু ধর্মঘটের কারণে অ্যাম্বুলেন্সে করে জনপ্রতি ২০০ টাকা দিয়ে যেতে হচ্ছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার (১০ নভেম্বর) ফরিদপুর জেলা মালিক সমিতি ঐক্য পরিষদের পক্ষ থেকে বাস-মিনিবাস ধর্মঘটের কথা জানিয়ে দেওয়া হয়।
মাইকিংয়ে বলা হয়েছিল, মহাসড়কে তিন চাকার যান চলাচল নিষিদ্ধের দাবিতে ১১ নভেম্বর সকাল ৬টা থেকে ১২ নভেম্বর রাত ৮টা পর্যন্ত জেলার সব রুটে বাস-মিনিবাস চলাচল বন্ধ রাখতে বলা হলো।
এদিকে, ফরিদপুরে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশকে সামনে রেখে যাত্রীবাহী বাস ও মিনিবাসের সঙ্গে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশনের (বিআরটিসি) বাস চলাচলও বন্ধ রাখা হয়েছে।
এ ব্যাপারে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও ফরিদপুর বিভাগীয় গণসমাবেশের প্রধান সমন্বয়কারী ডা. এ জড এম ড. জাহিদ হোসেন বলেন, ফরিদপুরে বিএনপির গণসমাবেশকে বাধাগ্রস্ত করার জন্যই বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির ধর্মঘট ডাকা হয়েছে। বাস-মিনিবাস মালিক সমিতি মহাসড়কে তিন চাকার যান চলাচল নিষিদ্ধের দাবিতে যে চিঠি দিয়েছিল, তাতে তারা ১০ নভেম্বর সন্ধ্যা পর্যন্ত দাবি মেনে নেওয়ার জন্য আল্টিমেটাম দিয়েছিল। কিন্তু তাদের সেই আল্টিমেটাম শেষ হওয়ার আগেই তারা শহরে মাইকিং করে বাস ধর্মঘটের কথা জানিয়ে দিয়েছে। এটি যে সরকারেরই একটি পাতানো খেলা, এতে সেটিই প্রমাণ হয়ে গেছে।
এদিকে এ ব্যাপারে জেলা বাস মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক গোলাম নাসির বলেন, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মহাসড়কে অবৈধ যান চলাচল বন্ধের পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য ফরিদপুর জেলা প্রশাসক (ডিসি) অতুল সরকারের মাধ্যমে ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার বরাবর গত ৭ নভেম্বর চিঠি দিয়ে আমাদের দাবি মেনে নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছিলাম। তবে সেই দাবি মানা হয়নি। ফলে শুক্রবার ভোর ৬টা থেকে ১২ নভেম্বর শনিবার রাত ৮টা পর্যন্ত ফরিদপুর জেলা বাস টার্মিনাল থেকে আঞ্চলিক বাস ও মিনিবাসসহ দূরপাল্লার পরিবহনের সব রুটের বাস চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।
ফরিদপুরের বিআরটিসি পরিবহনের সহকারী পরিচালক মোজাম্মেল হাসান বলেন, বাস মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদ মহাসড়কে সব ধরনের অবৈধ তিন চাকার যান চলাচল বন্ধের জন্য ৩৮ ঘণ্টার ধর্মঘট ডেকেছে। আমরাও তাদের দাবির সঙ্গে একমত। এ কারণে তাদের মতো আমরাও বাস চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছি। এমনকি এ দুদিন কাউন্টারও বন্ধ থাকবে।
Array