তথ্যপ্রযুক্তির ক্ষেত্রে চীনের হস্তক্ষেপ সম্পর্কে পশ্চিমা বিশ্বে বাড়ছে সংশয়। এই কারণে চীনা বিনিয়োগকারীদের কাছে দুইটি জার্মান কোম্পানি বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছে ওলাফ শলৎসের সরকার। এই ঘটনাকে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের ছন্দপতন বলে মনে করা হচ্ছে।
সম্প্রতি চীন সফর করেছেন জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস। তার আগে যাবতীয় বিরোধিতা উপেক্ষা করে হামবুর্গ বন্দরের একটি প্রকল্পে চীনের কোম্পানির অংশগ্রহণের ছাড়পত্র দিয়েছিলেন তিনি। এ নিয়ে পশ্চিমা বিশ্বে বিতর্ক দেখা দেয়।
তবে সফর করলেও চীনের প্রতি সদয় হতে পারছে না জার্মানি। অর্থনীতি বিষয়ক মন্ত্রী রোব্যার্ট হাবেক জানিয়েছেন, চীনা বিনিয়োগকারীরা দুটি জার্মান কোম্পানি কিনতে পারবেন না।
নিরাপত্তাজনিত দুশ্চিন্তার কারণে মাইক্রোচিপ প্রস্তুতকারী কোম্পানি এলমোস বিক্রি সম্পর্কে আগেই সংশয় প্রকাশ করেছিলেন রোব্যার্ট হাবেক। ব্যবসাবাণিজ্য সংক্রান্ত গোপনীয়তার কারণে তিনি দ্বিতীয় কোম্পানিটি সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করেননি। তবে জার্মানির ‘হান্ডেল্সব্লাট’ পত্রিকার সূত্র অনুযায়ী, বাভেরিয়া-ভিত্তিক ইআরএস ইলেকট্রনিক্স কোম্পানির বিক্রির ক্ষেত্রেও জার্মান সরকার অনুমোদন দেয়নি। এই কোম্পানি সেমিকন্ডাক্টর ইলেকট্রনিক্স উৎপাদন করে।
জার্মান অর্থনীতি বিষয়ক মন্ত্রী হাবেক এই সিদ্ধান্তের ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেন, জার্মানি অবশ্যই মুক্ত বাজার অর্থনীতির দেশ। চীন বর্তমানে জার্মানির বাণিজ্য সহযোগী এবং ভবিষ্যতেও থাকা উচিত৷তবে তার মতে, বাণিজ্যকে ‘পাওয়ার পলিটিক্স’ এর হাতিয়ার করা এবং সম্ভবত রাষ্ট্রের স্বার্থের বিরুদ্ধে কাজে লাগানো হতে পারে। বিশেষ করে কিছু জরুরি শিল্পক্ষেত্রে নির্ভরতা কমানো উচিত।
হাবেক আরও বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরে থেকেও বিনিয়োগকে জার্মানি স্বাগত জানাচ্ছে। তবে মুক্ত বাজার অর্থনীতি মোটেই ‘নাইভ’ বা ‘সরল’ বাজার অর্থনীতি নয়।
জার্মানির ডর্টমুন্ড শহরের এলমোক্স কোম্পানি মাইক্রোচিপ ওয়েফার উৎপাদন শাখা সুইডেনের প্রতিযোগী কোম্পানি সিলেক্সকে বিক্রি করতে চেয়েছিল। সেই কোম্পানি আবার চীনের সাই গ্রুপের অধীনে রয়েছে।
ডর্টমুন্ড শহরের মেয়র টোমাস ভেস্টফাল সরকারের এই সিদ্ধান্ত সম্পর্কে দুশ্চিন্তা প্রকাশ করে বলেন, এর ফলে এলমোক্স কোম্পানির কারখানায় ছাঁটাইয়ের ঝুঁকি দেখা দিতে পারে।
চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র জার্মান সরকারের উদ্দেশ্যে চীনা কোম্পানিগুলিকে সমান মর্যাদা দেবার ডাক দেন। জাতীয় স্বার্থের দোহাই দিয়ে প্রোটেকশনিস্ট বা সংরক্ষণবাদী পদক্ষেপ সম্পর্কে তিনি সতর্ক করেন।
সূত্র: ডয়চে ভেলে
Array