বার্সেলোনার জেরার্ড পিকে বছর চারেক আগেই আন্তর্জাতিক ফুটবলকে বিদায় জানিয়েছিলেন।এই স্প্যানিশ ডিফেন্ডার বিশ্বকাপ বিরতিতে ক্লাব ফুটবলেরও ইতি টানার ঘোষণা দেন। সে অনুযায়ী মঙ্গলবার রাতে ( ৯ নভেম্বর) রাতে পেশাদার ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ ছিল বিশ্বকাপ জয়ী পিকের। তবে শেষ ম্যাচে মাঠের নামের আগেই লাল কার্ড দেখতে হলো তাকে।
এর ফলে পিকে ভক্তরা তার শেষ ম্যাচের রোমাঞ্চ থেকে বঞ্চিত হলেন। আর শেষ ম্যাচটি পিকের জন্য স্মরণীয় হয়ে থাকল অন্যভাবে।
ওসানসুসার বিপক্ষে এই ম্যাচে লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়তে হয়েছে রবার্ট লেভানডোভস্কিকেও। রেফারি জেসুস গিল মানজানোর নানা সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ বার্সা কোচ জাভি হার্নান্দেজও দেখেছেন হলুদ কার্ড।
১০ জনের দল নিয়েও অবশ্য ২-১ গোলে ম্যাচটি জিতে এসেছে বার্সা। ১৪ ম্যাচে ৩৭ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে থেকে বিশ্বকাপ বিরতিতে যাচ্ছে তারা। এক ম্যাচ কম খেলে রিয়াল মাদ্রিদ (৩২) পাঁচ পয়েন্ট পেছনে থেকে দ্বিতীয় স্থানে।
তবে ম্যাচের শুরুটা ভালো হয়নি কাতালানদের। ষষ্ঠ মিনিটে প্রথম উল্লেখযোগ্য সুযোগেই এগিয়ে যায় ওসাসুনা। কর্নারে ডি-বক্সে হেডে গোলটি করেন স্প্যানিশ ডিফেন্ডার গার্সিয়া।
বল দখলে শুরু থেকে আধিপত্য দেখালেও আক্রমণে তেমন সুবিধা করতে পারছিল না বার্সা। ২৬ মিনিটে প্রথম ভালো সুযোগ পায় তারা। ডি-বক্সের ভেতর থেকে লেভানদোভস্কির শট ঝাঁপিয়ে ঠেকান গোলরক্ষক।
৩১তম মিনিটে দলের বিপদ বাড়ান লেভানদোভস্কি। মাঝমাঠের কাছাকাছি গার্সিয়াকে বাজেভাবে ফাউল করায় দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখেন।
প্রথমার্ধের শেষ দিকে ওসাসুনার জালে বল পাঠান ফেররান তরেস, তবে অফসাইডের কারণে গোলটি বাতিল হয়।
এরপর, প্রথমার্ধের বিরতির সময় বেঞ্চে থাকা পিকেকে রেফারির সঙ্গে আগ্রাসী ভঙ্গিমায় কথা বলতে দেখা যায়। সম্ভবত লেভানদোভস্কির লাল কার্ডের ঘটনায় প্রতিবাদ করছিলেন তিনি। রেফারির পেছনে পেছনে কিছু বলতে বলতে তিনি টানেলে যান। পরে তাকে লাল কার্ড দেন রেফারি।ফলে মাঠে না নেমেই ক্যারিয়ারের বিদায়ী ম্যাচ শেষ করতে হয় জেরার্ডকে।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুটা অবশ্য ভালো হয় বার্সেলোনার। ৪৮তম মিনিটে পেদ্রির গোলে সমতায় ফেরে তারা। ৬৮তম মিনিটে দারুণ সেভ করে দলকে লড়াইয়ে রাখেন মার্ক-আন্ড্রে টের স্টেগেন।
৭৮তম মিনিটে জোড়া পরিবর্তন আনেন শাভি। তরেস ও উসমান দেম্বেলেকে তুলে মাঠে নামান আনসু ফাতি ও রাফিনিয়াকে।
নির্ধারিত সময়ের পাঁচ মিনিট বাকি থাকতে মাঝমাঠ থেকে ফ্রেংকি ডি ইয়ংয়ের চমৎকার ক্রসে অফসাইডের ফাঁদ এড়িয়ে বক্সে ঢুকে হেডে আগুয়ান গোলরক্ষকের মাথার ওপর দিয়ে বল জালে পাঠান রাফিনিয়।
এই হারের পর ১৪ ম্যাচে ২৩ পয়েন্ট নিয়ে ছয় নম্বরে আছে ওসাসুনা।
বার্সার হয়ে ১৪ বছরের পথচলায় ৬১৫ ম্যাচ খেলেছেন পিকে। ডিফেন্ডার হলেও গোল করেছেন ৫২টি। তিনটি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, আটটি লা লিগা, সাতবার কোপা দেল রেসহ ৩০টি শিরোপা জয়ে সঙ্গী হয়েছেন প্রিয় ক্লাবের।
আন্তর্জাতিক ফুটবলেও পেয়েছেন সবচেয়ে বড় অর্জন বিশ্বকাপ। ২০১০ সালে স্পেনের বিশ্বকাপ জয়ী দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন পিকে। জিতেছেন ২০১২ সালের ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপও।
বার্সেলোনার একেডমির খেলোয়াড় ছিলেন তিনি। ২০০৪ সালে যোগ দেন ইংলিশ ক্লাব ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে। ক্লাবটিতে চার বছর থাকাকালে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, প্রিমিয়ার লিগ জেতেন পিকে। ২০০৮ সালে আসেন বার্সায়। এরপর থেকে ন্যু ক্যাম্পই পিকের সব কিছু।
Array