নিজস্ব প্রতিবেদক:
মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের গ্রেডিং পদ্ধতি জিপিএ-৫-কে “খুবই ভয়ংকর ব্যাপার” বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষাবিদ ও লেখক মুহম্মদ জাফর ইকবাল।
তিনি বলেছেন, “একটা সময় ছিল, যখন কেউ আমাকে বলত, এই যে আমার ছেলে বা মেয়েটা জিপিএ-৫ পেয়েছে। বলতাম, বাহ্, কী চমৎকার! তারপর দেখলাম, জিপিএ-৫ পাওয়াটা আসলে খুবই ভয়ংকর ব্যাপার। কোনো মা-বোন যখন বলেন যে আমার ছেলে বা মেয়েটা জিপিএ-৫ পেয়েছে, আমি বলি যে “আহারে, বাচ্চাটাকে কত কষ্ট করতে হয়েছে, স্কুলে-কোচিং-প্রাইভেট-গাইড বই মুখস্থ করতে হয়েছে। পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে, বাপ-মা ফেসবুক থেকে প্রশ্ন ডাউনলোড করে সলভ করছে, তারপর সেটা মুখস্থ করানো হয়েছে। আহারে, বাচ্চাটার কষ্ট হয়েছে!”
বুধবার (২৬ অক্টোবর) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) মিলনায়তনে পঞ্চম বাংলাদেশ রোবট অলিম্পিয়াড ২০২২-এর সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জাফর ইকবাল বলেন, “তারপরও কোনোভাবে যদি ফল একটু খারাপ হয়ে যায়, বাবা-মা, আত্মীয়স্বজন বাচ্চাটাকে বকে ও গালাগাল করে। আমার বুকটা একদম ভেঙে যায়, যখন দেখি যে পরীক্ষার ফল খারাপ হওয়ায় অমুক জায়গায় একটা ছেলে আত্মহত্যা করেছে। তোমরা এগুলো নিয়ে মাথা ঘামাবা না। তোমরা তোমাদের দেড় কেজি ওজনের মস্তিষ্কটাকে বাঁচিয়ে রাখো। ব্যস, আর কিছু লাগবে না।”
অনুষ্ঠানে প্রতিযোগী ও তাদের অভিভাবকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “সবাই পুরস্কার পাবে না, কেউ কেউ পাবে। পুরস্কার পাওয়াটাই বড় কথা নয়, পুরস্কার না পেলে জীবন বৃথা যায় না। আমাদের দেশের এতগুলো ছেলেমেয়ে রোবট নিয়ে কাজ করেছেন। ৫০ বছর আগে আমরা যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তাম, তখন ভাবতাম যে রোবট কি আমরা কোনো দিন পাব, রোবট কি কোনো দিন দেখব? সে জন্য আমি বানিয়ে বানিয়ে রোবটের গল্প লিখতাম। আর এখন তোমরা (খুদে শিক্ষার্থী) নিজেরা রোবট তৈরি করছ। খুব চমৎকার লাগে দেখতে! আমাদের দেশে পড়াশোনাটা এখনো ঠিক হয়নি। ঠিক করার চেষ্টা হচ্ছে।”
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী। সভাপতিত্ব করেন তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. মোস্তফা কামাল।
Array