আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট লুইসে একটি উচ্চ বিদ্যালয়ে গোলাগুলিতে সন্দেহভাজনসহ অন্তত তিনজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ছয়জন।
মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) শহরটির পুলিশ কমিশনার মাইক স্যাকের বরাতে বার্তা সংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে জানায়, সোমবার সকালে এই হামলার ঘটনা ঘটে। সকাল ৯টার একটু পর মিজৌরি অঙ্গরাজ্যের শহরটির সেন্ট্রাল ভিজুয়্যাল অ্যান্ড পারফর্মিং আর্টস উচ্চ বিদ্যালয়ে ওই সন্দেহভাজন বন্দুকধারী প্রবেশ করে তাণ্ডব চালায়।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই সময় স্কুল ভবনের দরজাগুলো বন্ধ ছিল, সন্দেহভাজন কীভাবে সেখানে প্রবেশ করেছে তাৎক্ষণিকভাবে তা পরিষ্কার হয়নি। হামলার উদ্দেশ্যও জানা যায়নি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, হামলার মধ্যেই বন্দুকধারীর অস্ত্র জ্যাম হয়ে যাওয়ায় অনেক জীবন রক্ষা পায়। সেন্ট লুইস পাবলিক স্কুল বলেছে, পুলিশ বন্দুকধারীকে “দ্রুত” নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছে।
সন্দেহভাজন ২০ বছর বয়সী সাবেক শিক্ষার্থী। পুলিশের সঙ্গে গোলাগুলিতে তার মৃত্যু হয়। এ সময় স্কুলটিতে প্রায় ৪০০ জন শিক্ষার্থী ছিল।
স্কুলের ভেতরেই এক কিশোরীকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। হাসপাতালে নেওয়ার পর আরেকজনের মৃত্যু হয়। আহত ছয়জনের মধ্যে বালক ও বালিক রয়েছে তাদের কারও জখমই প্রাণঘাতী নয় বলে স্থানীয় গণমাধ্যমকে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট পুলিশ।
সেন্ট লুইসের পুলিশ কমিশনার মাইকেল স্যাক জানান, যখন পুলিশ কর্মকর্তারা স্কুলটিতে পৌঁছান তখন শিক্ষার্থীরা সেখান থেকে দৌঁড়ে বের হচ্ছিল, পুলিশকে দেখে তারা জানায় হামলাকারীর হাতে “লম্বা বন্দুক” আছে।
তিনি জানান, স্কুলটির সাত নিরাপত্তা কর্মী দ্রুত অন্যদের সতর্ক করে এবং পুলিশে খবর দেয়।
বন্দুকধারীর কাছে প্রায় ডজনখানেক উচ্চ ক্ষমতার ম্যাগজিন ছিল আর সেগুলোতে কয়েকশ গুলি ছিল জানিয়ে স্যাক বলেন, “ঘটনা আরও অনেক খারাপ হতে পারতো।”
স্কুলটির এক শিক্ষার্থী স্থানীয় সংবাদ স্টেশন কেএমওভিকে জানিয়েছেন, হামলাকারী হেঁটে তার এক মেয়ে বন্ধুর কাছে গিয়ে তাকে জিজ্ঞেস করে, “তুমি মরতে প্রস্তুত?”
রাভেন টেরি নামের এই শিক্ষার্থী বলেন, “আমরা অনেক জোরে দৌড় দিই আর আমরা কাঁদছিলাম। এ ঘটনায় আমরা সবাই কেঁপে উঠেছি।”
সেন্ট লুইস পোস্ট-ডিসপ্যাচ সংবাদপত্রকে শিক্ষার্থী তানিয়া গোলস্টন (১৬) জানান, বন্দুকধারী তার ক্লাশরুমে প্রবেশ করে তাকে গুলি করার চেষ্টা করেছিল।
তিনি বলেন, “আমি দৌড় দেওয়ার চেষ্টা করেছিলাম কিন্তু দৌড়াতে পারছিলাম না। বন্দুকধারীর সঙ্গে আমার চোখাচোখি হয়ে যায় কিন্তু তার বন্দুক জ্যাম হয়ে যাওয়ায় আমি পালিয়ে বাঁচি। এ সময় আমি শুনতে পাই হামলাকারী বলছে, ‘এই অসহ্য স্কুল নিয়ে আমি ক্লান্ত হয়ে পড়েছি’।”
পুলিশ জানিয়েছে, বন্দুকধারী গত বছর এই স্কুল থেকে গ্রাজুয়েশন করেছে এবং তার কোনো ক্রিমিনাল রেকর্ড ছিল না।
নিহতদের মধ্যে একজনকে স্কুলটির স্বাস্থ্য বিষয়ক শিক্ষক জিন কুজকা (৬১) বলে শনাক্ত করেছে তার পরিবার। কুজকা ২০০৮ সালে স্কুলটিতে যোগ দিয়েছিলেন।
Array