আজকালের বার্তা দিনাজপুর প্রতিনিধি : দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে- ফুলবাড়ী টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিএম ইন্সটিটিউটের নামে খারিজ-খতিয়ানভূক্ত ভূমি রক্ষা ও শিক্ষক কর্মচারী, শিক্ষার্থীদেরকে ভয়-ভীতি প্রর্দশন ও সরকারী বরাদ্ধকৃত ভবন নির্মাণে বাধা সৃষ্টিকারীদের শাস্তির দাবিতে কলেজ চত্তরে গত বৃহস্পাতিবার সকাল সাড়ে ১০ টায় ঘন্টা ব্যাপি প্রতিবাদ সভা ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানবন্ধনে বক্তব্য রাখেন ফুলবাড়ী টেকনিক্যাল এন্ড বিএম ইন্সটিটিউট এর অধ্যক্ষ মোঃ আবু তৈয়ব ছালাহউদ্দিন। তিনি তার বক্তেব্য বলেন, আমি দিনাজপুর জেলার ফুলবাড়ী পৌরসভার প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত ফুলবাড়ী টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিএম ইন্সটিটিউট কলেজ স্থাপন করি। এই কলেজের নামে খারিজ-খতিয়ানভূক্ত ৩৫ শতাংশ নিজস্থ জমিতে কলেজটি গড়ে তোলা হয়েছে। আত্ন-কর্মসংস্থান সৃষ্টি,বেকারত্ব হ্রাস ও সমাজকে সুশিক্ষায় আলোকিত করার লক্ষে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপনের জন্য ভ্রাতা স্বীয় ভ্রাতা মোহাম্মদ আলী কাদের নেওয়াজ এর পারিবারিক সমঝোতামূলক আলোচনায় আলহাজ্ব দারাজ উদ্দীন মন্ডল এর জীবন দশায় তার উপস্থিতে ও গণ্যমান্য ব্যাক্তি বর্গের সমঝোতায় পূর্ব গৌরী-পাড়া মৌজার ২৪৯ নং দাগে ৬৭ শতাংশ ভূমির দাগে পূর্বাংশের ৩৫ শতাংশ জমিতে ২০০১ ইং সালে ফুলবাড়ী টেকনিক্যাল এন্ড বি.এম ইন্সটিটিউট গড়ে উঠে। বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষাবোর্ড কতৃক বিধি মোতাবেক ২০০৫ সালে অনুমতি প্রাপ্ত হন। প্রতিষ্ঠানের নামে জমি হস্তান্তরের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিলে ২০০৯ সালে মোজাফ্ফর হোসেন ৬৭ শতাংশ জমির মধ্যে ৩৫ শতাংশ জমি দানপত্র দলিল মূলে প্রতিষ্ঠানের নামে রেজিষ্ট্রি করে দেন। যার দলিল নম্বর ১৬১০৬, তারিখ ১১/০৫/২০০৯ ইং। ২০১০ সালে প্রতিষ্ঠানটি এমপিও ভুক্ত হয়। প্রতিষ্ঠানটির স্বারক নং বাকশিবো/ক(বিএম)/২০০৫/২৩২২,তারিখ ০৬-০৯-২০০৫।
গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার ও বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড অনুমোদিত ব্যবস্থাপনা কমিটির প্রত্যক্ষ তত্ববধানে পরিচালিত হয় এবং পদাধিকার বলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সভাপতি হিসাবে সরকরি প্রতিনিধিত্ব করেন ।বর্তমান উক্ত প্রতিষ্ঠানে শিক্ষা ক্রমে প্রায় ১০০০ জন শিক্ষার্থী ও অধ্যায়ন রত ৩০ জন শিক্ষক-কর্মচারি কর্মরত রয়েছেন।উল্লেখ্য উক্ত প্রতিষ্ঠানের জমিদাতা মোঃ মোজাফফর হোসেন ও মোঃ আবু তৈয়ব ছালাহ উদ্দিন এবং প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব অর্থায়নে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি ৬ তলা ভবণের ফাউন্ডেশনসহ প্রথম তলা সম্পন্নকৃত ভবন নির্মাণের প্রক্কালে স্থানীয় পৌর কর্তৃপক্ষের আইন সম্মত সরকার নির্ধারিত টাকা পরিশোধ করে ভবনের নকশা ও নির্মাণের অনুমতি গ্রহণ করা হয়। এমনকি ২০০১ সাল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানের নামে খারিজ,দাগ ও খতিয়ানভুক্ত জমির খাজনা ও বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করা হয়েছে এবং বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে প্রতিষ্ঠানের নামে প্রতি বছর সরকারি আইন অনুযায়ী বর্তমান সময় পযন্ত স্বীকৃতি নবায়ন এর টাকা পরিশোধ করা হয়েছে।
বিগত ২০০১ সালে থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত “ফুলবাড়ী টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিএ ইন্সটিটিউট”এর নামে খারিজ-খতিয়ানভুক্ত ৩৫ শতাংশ জমিতে সেমিপাকা দুইটি অবকাঠামোতে এগারোটি রুম ও চারটি টয়লেট । তাছাড়া শেখ রাসেল ডিজিটাল কম্পিউটার ল্যাব ও একটি বিজ্ঞান ল্যাব বিদ্যমান। তিনটি অবকাঠামো বাদে অবশিষ্ট অংশ কলেজের উন্মক্ত মাঠ হিসাবে ব্যবহার হচ্ছে । স্থানীয় সংসদ সদস্য ও সাবেক মন্ত্রীর ডিও ও ঐকান্তিক প্রচেষ্ঠায় “ফুলবাড়ী টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিএ ইন্সটিটিউট”এর নামে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর গত ২০০২১-২২ অর্থ বছরে সরকারি পরিচালন বাজেটের আওতায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের অনুকুলে কোড নং ১৬০০১০১-১২০০০১৬০২-৪১১১০০১(পুর্বতন- ৭০১৬)শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভবন নির্মাণ/সম্প্রসারন কাজের জন্য অফিস আদেশের ১৫ নং ক্রমিকে ৩,৫০,০০,০০০০/-(তিন কোটি পঞ্চাশ লক্ষ) টাকা বরাদ্দ সাপেক্ষে চার তলা ভবনে শ্রেণীকক্ষ নির্মণের জন্য অনুমতি প্রদান করে ।
জমিদাতার ভাই মোহাম্মদ আলী কাদের নেওয়াজ ইতিপূর্বে তাদের বাবার উপস্থিতে দুই ভাইয়ের মধ্যে সমঝোতামুলক আলোচনা ও অঙ্গীকারের পরেও প্রতিষ্ঠানের দখলীয় জমিতে নিজেরা দখল করতে বিশৃংখলা ও প্রতিষ্ঠানের পরিবেশ বিনষ্টের চেষ্ঠা চালালে স্থানীয় সংসদ সদস্যর নির্দেশে এলাকার গণ্যমাণ্য ব্যাক্তিবর্গের উপস্থিতে ২৮/০৮/২০১৭ তারিখে প্রাতিষ্ঠানিক পরিবেশ ঠিক রেখে পূর্বের পারিবারিক সমঝোতামুলক আলোচনা ও অঙ্গীকারের অনুরুপ প্রতিষ্ঠানের পশ্চিম অংশে ৩২ শতাংশ মোহাম্মদ আলী কাদের নেওয়াজ দখলীয় জমিতে অবস্থানের জন্য সালিশী সিদ্ধান্তের পর বর্তমানে প্রতিষ্ঠানের চৌহিদিকৃত অংশে সরকারি বরাদ্দে নতুন ভবন নির্মাণের প্রক্কালে আবারো“ফুলবাড়ী টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিএ ইন্সটিটিউট”এর জমির অংশে মোহাম্মদ আলী কাদের নেওয়াজ এর জামাতা ফুলবাড়ী পৌরসভার প্রধান অফিস সহকারি পৌরসভার ক্ষমতাকে অবৈধ্য ভাবে ব্যবহার করে মোঃ জাহাঙ্গীর আলম গংরা দখল প্রতিষ্ঠায় বেপরোয়া ও ধ্বংসাতুক হয়ে উঠে প্রতিষ্ঠানে স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত করাসহ অধ্যক্ষ-শিক্ষক-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের ভয় ভীতি ও জীবন নাশের হুমকি প্রদর্শন করছেন এবং সরকারী বরাদ্দকৃত ভবন নির্মাণ কাজে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছেন। এই বিষয়ে প্রতিষ্ঠানের সার্বিক অধিকার প্রতিষ্ঠা ও সুষ্ঠভাবে কার্যক্রম পরিচালনার লক্ষ্যে ব্যবস্থাপনা কমিটির সিদ্ধান্তক্রমে ২০/০৮/২০২২ইং তারিখে প্রতিষ্ঠানের ভূমি রক্ষা ও সরকারি ভবন নির্মানে বাধা সৃষ্টি এবং কুচক্রীমহলে অপতৎপরতা রোধে বিজ্ঞ যুগ্ম জজ-১ম আদালত দিনাজপুরে ফুলবাড়ী টেকনিক্যাল অ্যান্ড বি.এম ইন্সটিটিউট এর অধ্যক্ষ মোঃ আবু তৈয়ব ছালাহউদ্দিন বাদী হয়ে আব্দুস ছালেক গং কে বিবাদী করে একটি মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নম্বর ৫১/২০২২ অন্য, তারিখ ২৩/০৮/২০২২। গত ০৯/১০/২০২২ ইং তারিখে মোকদ্দমা চলছে মর্মে ফুলবাড়ী পৌরসভার মেয়রকে পত্র দ্বারা অবগত করেন। অবগত করা এবং জমির কোন মালিকানা না থাকার পরেও মোঃ জাহাঙ্গীর আলম গংরা প্রতিষ্ঠানে এসে গত ১৯/১০/২০২২ ইং তারিখে কলেজের জায়গা জবর দস্তি দখলের চেষ্টা করে ও কলেজের শিক্ষক- কর্মচারীদেরকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও কলেজ দখল করার চেষ্ঠা করে।
মানববন্ধন থেকে জানানো হয় “ফুলবাড়ী টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিএম ইন্সটিটিউট”এর নিজস্ব নামে খাজনা-খারিজভুক্ত নিঃকন্ঠ জমিসহ খেলার মাঠ রক্ষা প্রতিষ্ঠানের খেলার মাঠ সংরক্ষণ করা সীমানা প্রাচীর নির্মাণের লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠান সংলগ্ন একই মৌজা ও দাগের অবশিষ্ট ৩২ শতাংশ জমির দখলী স্বত্বাধীকারি মোহাম্মদ আলী কাদের নেওয়াজ এর অংশ হতে প্রতিষ্ঠানে ভবন নির্মাণ ও সম্প্রসারনের জন্য প্রতিষ্ঠানের নামে কিছু শতাংশ জমি দান অথবা প্রতিষ্ঠানের নিকট বিক্রয়ের ব্যাবস্থ গ্রহন করে চলমান বিরোধ স্থায়ী ভাবে নিস্পত্তি করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু যুগান্তরকারী হস্তক্ষেপ কামনা করেন । সেই সাথে মানববন্ধন থেকে দৃস্কৃতিকারী-ভুমিদস্যু,কুচক্রীমহল কর্তৃক প্রতিষ্ঠানের স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনায় ব্যাঘাত সৃষ্টি কর্মরত শিক্ষক-কর্মচারীবৃন্দ ও শিক্ষার্থীদের ভয় ভীতি ও হুমকি প্রদর্শন ও সরকারি বারাদ্দকৃত ও অর্থায়নে চার তলা ভবন নির্মাণে বাধা সৃষ্টিকারীদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবীতে মানববন্ধন শেষে প্রতিষ্ঠানের পক্ষে দুটি প্রতিনিধি দল ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফুলবাড়ী,সহকারী কমিশনা(ভুমি) ফুলবাড়ী,পৌর মেয়র,উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফুলবাড়ী,জেলা শিক্ষা অফিসাস,পুলিশ সুপার,জেলা প্রশাসক,চেয়ারম্যান কারিগরি শিক্ষাবোর্ড,মহাপরিচালক কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর,সচিব কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ,শিক্ষামন্ত্রী এবং জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্বরাকলিপি প্রদান করা হয় ।
প্রতিবাদ সভা ও মানব বন্ধনে কলেজের সকল শিক্ষক, কর্মচারী ও কলেজের শিক্ষার্থী স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি ও প্রিন্ট ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
Array