রাজশাহী প্রতিনিধি:
হাসপাতালে হামলা ও ভাঙচুরের প্রতিবাদে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। বুধবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে ধর্মঘটের ডাক দিয়ে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা সবাই একযোগে হাসপাতাল ত্যাগ করেন।
বৃহস্পতিবার (২০ অক্টোবর) সকালে (৯টা ৩০ মিনিট) এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কর্মবিরতি চলছিল। এতে রোগীদের ব্যাপক ভোগান্তির সৃষ্টি হয়।
এর আগে রাত ১১টার দিকে কর্মবিরতি করে হাসপাতালের সামনে অবস্থান নেন তারা। রাত ১২টার দিকে হাসপাতাল ত্যাগ করার আগে সাংবাদিকদের সামনে ধর্মঘটের ঘোষণা দেন ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি ডা. ইমরান হোসেন।
হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী জানান, ইন্টার্ন চিকিৎসকরা নিরাপত্তাহীনতার কথা বলে রাত ১২টার দিকে হাসপাতাল ছেড়ে চলে গেছেন। তাদের দাবি, হাসপাতালে হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। তাদের নিরাপত্তা দিতে হবে।
পরিচালক বলেন, “হাসপাতালের বিষয় নিয়ে রাতে বৈঠকে বসে কর্তৃপক্ষ। রাত ২টার দিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ছাত্র শাহরিয়ারের চিকিৎসার অবহেলার অভিযোগ তদন্তে ছয় সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। একই সঙ্গে তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”
তদন্ত কমিটির প্রধান করা হয়েছে রাজশাহী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. নওশাদ আলীকে। কমিটিতে থাকবেন হাসপাতালের উপ-পরিচালক, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির দুই জন প্রতিনিধি এবং আরএমপির দুই জন প্রতিনিধি।
বুধবার রাত ৮টার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ হবিবুর রহমান হলের চারতলার ছাদ থেকে পড়ে আহত হন মার্কেটিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র শাহরিয়ার। পরে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। রাত ৯টার দিকে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
তবে পৌনে ১ ঘণ্টা হাসপাতালে থাকলেও শাহরিয়ারকে কোনো চিকিৎসা দেওয়া হয়নি অভিযোগ তুলে হাসপাতালে ভাঙচুর চালিয়ে দুই চিকিৎসককে অবরুদ্ধ করে রাখেন শিক্ষার্থীরা। সে সময় হাসপাতালের আনসার সদস্য ও ইন্টার্ন চিকিৎসকদের সঙ্গে রাবি শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ এবং ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে ৫ রাবি শিক্ষার্থী আহত হন।
এদিকে, চিকিৎসায় অবহেলা ও শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় জড়িতদের শাস্তি এবং আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার দাবিতে হাসপাতালের সামনে অবস্থান নেন রাবি শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা তিন দফা দাবি আদায়ে বিক্ষোভ করেন। রাত ২টার দিকে তদন্ত কমিটি গঠন ও দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থার আশ্বাসে হাসপাতাল ত্যাগ করেন রাবি শিক্ষার্থীরা।
Array