• আজকের পত্রিকা
  • ই-পেপার
  • আর্কাইভ
  • কনভার্টার
  • অ্যাপস
  • ইসলামে সুন্দর অর্থবহ নাম রাখার যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছে 

     ajkalerbarta 
    02nd Oct 2022 9:01 pm  |  অনলাইন সংস্করণ

    মানুষের পরিচয়ের অতি গুরুত্বপূর্ণ ও মৌলিক মাধ্যম হলো নাম। ইসলামে সুন্দর অর্থবহ নাম রাখার যথেষ্ট গুরুত্ব আছে এবং অসুন্দর নাম রাখা থেকে বেঁচে থাকা ও অসুন্দর নাম পরিবর্তন করে ভালো নাম রাখার স্পষ্ট নির্দেশনা আছে। নাম যেমন পরিচয় বহন করে, তেমনি চিন্তা-চেতনা ও রুচিও প্রকাশ করে। সুন্দর নাম মন-মানসিকতার ওপরও প্রভাব ফেলে।
    কাজেই সতর্কতার সঙ্গে নাম নির্বাচন করা উচিত।

    সুন্দর নামের গুরুত্ব্ব : পরিচয়ের জন্য নাম অপরিহার্য বিষয়। ইসলামে সুন্দর নাম অতি কাম্য। এমন নাম রাখা উচিত নয়, যা বলতে মানুষ লজ্জাবোধ করে। হাশরের ময়দানে প্রত্যেক ব্যক্তিকে তার নাম ও পিতার নামসহ ডাকা হবে। আবু দারদা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, কিয়ামতের দিন তোমাদের ডাকা হবে তোমাদের ও তোমাদের পিতার নাম নিয়ে (এভাবে ডাকা হবে—অমুকের ছেলে অমুক)। তাই তোমরা নিজেদের জন্য সুন্দর নাম রাখো। (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৯৫০)

    নাম রাখার সময় : জন্মের সপ্তম দিনে সন্তানের নাম রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। সামুরা ইবনে জুনদুব (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘প্রত্যেক নবজাতক আকিকার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকে। জন্মের সপ্তম দিনে তার পক্ষ থেকে প্রাণী জবাই করবে, নাম রাখবে এবং মাথা মুণ্ডন করবে। ’ (তিরমিজি, হাদিস : ১৫২২)

    নাম রাখার দায়িত্ব : নিজের নাম নিজে রাখা যায় না। এ দায়িত্ব মা-বাবার। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘সন্তানের সুন্দর নাম রাখা ও তার উত্তম শিক্ষাদীক্ষার ব্যবস্থা করা পিতার ওপর সন্তানের অধিকার। ’ (মুসনাদে বাজজার, হাদিস : ৮৫৪০)

    মানসিকতার ওপর নামের প্রভাব : মন-মানসিকতা ও স্বভাবের ওপর নামের একটা প্রভাব থাকে। এ জন্য শ্রুতিমধুর ও অর্থবোধক নাম হতে হয়। সাঈদ ইবনুল মুসাইয়্যাব (রা.) থেকে বর্ণিত, তার দাদা ‘হাজন’ রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর খেদমতে উপস্থিত হলে তিনি জিজ্ঞেস করেন, তোমার নাম কী? তিনি বলেন, আমার নাম হাজন। (হাজন অর্থ শক্ত) রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, না বরং তোমার নাম হওয়া উচিত ‘সাহল’ (সাহল অর্থ নরম) তিনি জবাবে বলেন, আমার পিতা আমার যে নাম রেখেছেন আমি তা পরিবর্তন করব না। সাঈদ ইবনুল মুসাইয়্যাব (রা.) বলেন, এরপর আমাদের পরিবারে পরবর্তীকালে কঠিন অবস্থা ও পেরেশানি লেগে থাকত। (বুখারি, হাদিস : ৫৮৪০)

    পছন্দনীয় নামে ডাকা : ঈমানের দাবি হলো অন্যকে বেশি পছন্দনীয় নাম ও পদবি সহকারে ডাকা। এ কারণে আরবে ডাক নামের প্রচলন ছিল। রাসুলুল্লাহ (সা.) তা পছন্দ করতেন। তিনি বিশেষ বিশেষ সাহাবিদের কিছু পদবি দিয়েছিলেন। যেমন আবু বকর সিদ্দিক (রা.)-কে আতিক, উমর (রা.)-কে ফারুক, হামজা (রা.)-কে আসাদুল্লাহ এবং খালিদ ইবনে ওয়ালিদ (রা.)-কে সাইফুল্লাহ পদবি দিয়েছিলেন।

    মন্দ নামে না ডাকা : কাউকে মন্দ নামে ডাকা বা অপমানজনক নামে সম্বোধন করা নিষিদ্ধ। এমনকি কেউ কোনো পাপ বা মন্দ কাজ করে তওবা করার পর তাকে আর সেই মন্দ কাজের নামে ডেকে লজ্জা দেওয়া যাবে না। আল্লাহ বলেন, ‘এবং তোমরা একে অন্যকে মন্দ নামে ডেকো না; ঈমানের পর মন্দ নাম অতি মন্দ। যারা তাওবা না করে তারাই জালিম। ’ (সুরা হুজরাত, আয়াত : ১১)

    নাম সংশোধন : না জেনে বা অবহেলাবশত কোনো অর্থহীন বা বিদঘুটে নাম রেখে ফেললে তা পরিবর্তন করে সুন্দর ও অর্থবহ নাম রাখা অবশ্য কর্তব্য। রাসুলুল্লাহ (সা.) কোনো সাহাবির ইসলাম-পূর্ববর্তী সময়ে রাখা এ ধরনের নাম শুনলে তা পরিবর্তন করে দিয়েছেন। ইবনে উমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) আসিয়ার নাম পরিবর্তন করে দিয়েছিলেন। আর বলেছিলেন, তোমার নাম জামিলা। (মুসলিম, হাদিস : ৫৭২৭)

    আসিয়া অর্থ পাপি, অবাধ্যচারিণী। এ নামের মধ্যে আল্লাহর অবাধ্যাচরণের ইঙ্গিত রয়েছে। পক্ষান্তরে জামিলা অর্থ রূপসী।

    সুন্দর নাম : সুন্দর নাম হলো, যা শ্রুতিমধুর ও অর্থবোধক হয়। ইসলামের ঐতিহ্য ও মুসলিম জাতির স্বাতন্ত্র্য রক্ষা করে। ইসলাম ধর্মের দাপ্তরিক ভাষা ও পরকালের ভাষা আরবি হওয়ার কারণে নাম আরবি ভাষায় হওয়াটা সমীচীন। সে ক্ষেত্রে নবী-রাসুল, সাহাবি, তাবেঈন ও তাবে-তাবেঈনদের নামে নাম রাখা নিরাপদ পন্থা। আবু ওয়াহাব জুসামি (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, তোমরা নবীদের নামে নাম রাখো। আল্লাহর কাছে সবচেয়ে প্রিয় নাম আবদুল্লাহ ও আবদুর রহমান। সবচেয়ে সত্য নাম হারিস ও হাম্মাম। আর সবচেয়ে খারাপ নাম হার্ব ও মুররাহ। (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৯৫২)

    হারেস অর্থ উপার্জনকারী, কর্মব্যস্ত ইত্যাদি। হাম্মাম অর্থ ইচ্ছাপোষণকারী। সব মানুষই ব্যস্ত থাকে এবং ইচ্ছা পোষণ করে। এ জন্য প্রতিটি মানুষই হারিস ও হাম্মাম। হারব অর্থ যুদ্ধ। মুররাহ অর্থ তিক্ত। এ জন্য প্রথম দুটি নামকে সবচেয়ে সত্য এবং শেষ দুটি নামকে সবচেয়ে খারাপ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।

    অসুন্দর নাম : খারাপ অর্থবোধক নাম, অহংকার ও বড়ত্বের প্রতি ইঙ্গিত প্রকাশকারী নাম এবং শুভ লক্ষণ গ্রহণের সঙ্গে সাংঘর্ষিক নামসমূহ রাসুলুল্লাহ (সা.) অপছন্দ করতেন। এগুলো অসুন্দর নাম। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, কিয়ামতের দিন আল্লাহর কাছে সবচেয়ে অপছন্দনীয় হবে ওই ব্যক্তির নাম, যে মালিকুল আমলাক (রাজাধিরাজ) নাম ধারণ করেছে। (বুখারি, হাদিস : ৫৮৫২; মুসলিম, হাদিস : ৫৭৩৪) সামুরা ইবনে জুনদুব (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, সন্তানের নাম ইয়াসার, রাবাহ, নাজীহ, আফলাহ রেখো না। কারণ তুমি জিজ্ঞেস করবে সে কি ঘরে আছে? অনুপস্থিত থাকলে উত্তর দেওয়া হবে না। (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৯৬০)

    ইয়াসার অর্থ: সহজ, সুখ ও প্রাচুর্য। রাবাহ অর্থ-উপকার, লাভ। নাজিহ অর্থ সফল। যে ব্যক্তি সফলতার চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে তাকে বলা হয় আফলাহ। কোনো ব্যক্তির নাম যদি এ চারটির কোনো একটি রাখা হয়, আর কেউ জানতে চাইল, ঘরে কি ইয়াসার, রাবাহ, নাজিহ অথবা আফলাহ আছে? উত্তর দেওয়া হলো, না, নেই। তাহলে যেন ঘরে সুখ, প্রাচুর্য ও কল্যাণের উপস্থিতিকে অস্বীকার করা হলো।

    মৃত সন্তানের নামকরণ : সন্তান জন্ম লাভ করে মৃত্যুবরণ করলে তার নাম রাখতে হয় এবং জানাজা পড়ে যথা নিয়মে কাফন-দাফন করতে হয়। মৃত জন্ম নেওয়া শিশুরও নাম রাখা উত্তম। তবে জানাজার দরকার নেই। জাবির (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, (মৃত জন্ম নেওয়া) শিশুর ওপর জানাজা পড়া হবে না, তার থেকে কেউ মিরাছ পাবে না এবং তাকেও মিরাছ দেওয়া হবে না। তবে যদি জন্মের পর কাঁদে তথা জীবিত জন্ম নেয়। (তাহলে তার জানাজা পড়তে হবে এবং মিরাছ পাবে)। (তিরমিজি, হাদিস : ১০৩২)

    নাম যখন রাখতেই হয়, সে ক্ষেত্রে অর্থ, প্রয়োগবিধি ও ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট স্মরণ রেখে শ্রুতিমধুর ও অর্থবোধক নাম নির্বাচন করলে নাম সুন্দর হবে ইনশাআল্লাহ। আল্লাহ সবাইকে তৌফিক দান করুন।

    লেখক : ড. আবু সালেহ মুহাম্মদ তোহা, সহযোগী অধ্যাপক, আরবি বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।

    Array
    We use all content from others website just for demo purpose. We suggest to remove all content after building your demo website. And Dont copy our content without our permission.
    আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
    Jugantor Logo
    ফজর ৫:০৫
    জোহর ১১:৪৬
    আসর ৪:০৮
    মাগরিব ৫:১১
    ইশা ৬:২৬
    সূর্যাস্ত: ৫:১১ সূর্যোদয় : ৬:২১

    আর্কাইভ

    October 2022
    M T W T F S S
     12
    3456789
    10111213141516
    17181920212223
    24252627282930
    31