অন্যের প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়া, দান করা, ইসলামে একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। দান-সদকার মাধ্যমে মানুষ বিপদ থেকে মুক্তি পায়। পরকালে দানকারীর জন্য বিশেষ পুরস্কারের ঘোষণা এসেছে হাদিসে। প্রকাশ্য ও গোপন সব দানেই সওয়াব রয়েছে, তবে গোপন দান উত্তম এবং আল্লাহর কাছে অত্যন্ত পছন্দনীয় আমল।
পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘যারা নিজের সম্পদ দিনে বা রাতে প্রকাশ্যে অথবা গোপনে আল্লাহর পথে খরচ করে তাদের পুরস্কার তাদের প্রতিপালকের কাছে আছে। তাদের কোনো ভয় নেই। তাদের কোনো চিন্তাও নেই।’ -(সুরা বাকারা: ২৭৪)
আল্লাহ তায়ালা আরও বলেন, ‘তোমরা যদি প্রকাশ্যে দান করো ভালো। আর যদি গোপনে দান করো এবং অভাবগ্রস্তকে দাও তা তোমাদের জন্য অধিক ভালো। -(সুরা আল বাকারা: ২৭১)
রিয়া বা লোক দেখানোর জন্য যে দান-সদকা করা হয় তা মুমিনের ইবাদত ধ্বংস করে তাকে জাহান্নামে নিয়ে যায়।
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘হে মুমিনগণ, দানের কথা প্রচার করো না এবং কষ্ট দিয়ে (খোঁটা দিয়ে) তোমাদের দান ওই ব্যক্তির মতো ব্যর্থ করো না, যে নিজের ধন সম্পদ কেবল লোক দেখানোর জন্যই ব্যয় করে..।’ -(সুরা বাকারা: ২৬৪)
গোপন দানের মর্যাদা বর্ণনা করতে গিয়ে রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন, ‘কেয়ামতের দিন যখন আরশের ছায়া ছাড়া কোন ছায়া থাকবে না, আল্লাহ তায়ালা সাত শ্রেণির মানুষকে তাঁর আরশের নিচে আশ্রয় দেবেন। তাদের মধ্যে একজন হলো ওই ব্যক্তি, যে এতো গোপনে দান করত যে, তার ডান হাতের দান বাম হাতও টের পেত না। -(বুখারি: ৬৬০, মুসলিম: ১০৩১)
মানুষকে দেখানোর জন্য দান করলে পরকালে এর জন্য কঠিন শাস্তি রয়েছে। হজরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি, কেয়ামতের দিন মহান আল্লাহ বিচারকার্য পরিচালনার শুরুতেই তিন ব্যক্তিকে ডাকবেন। তাদের একজন হবে এমন দানবীর যে মানুষকে দেখানোর জন্য দান করেছিল।
তাকে দেওয়া নেয়ামত (সম্পদ) সম্পর্কে অবহিত করা হলে সে তা স্বীকার করবে। তখন জিজ্ঞাসা করা হবে, এর জন্য তুমি কী আমল করেছ?
সে বলবে, আমি আপনার সন্তুষ্টির জন্য আমি আপনার পছন্দনীয় সব রাস্তাতেই ব্যয় করেছি।
এরপর আল্লাহ তায়ালা বলবেন, তুমি মিথ্যা বলছো। বরং তুমি এজন্যই ব্যয় করেছ, যাতে (তোমাকে) দাতা বলা হয়। (দুনিয়াতে তোমাকে) তা বলা হয়েছে।
তার সম্পর্কে আদেশ করা হবে, ফলে তাকে তার মুখের উপর (অধঃমুখে) টেনে-হেঁচড়িয়ে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে।’ -(তিরমিজি, ২৩৮২)
Array