প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ নেতারা বার বার হামলার শিকার হয়েছে। প্রতি পদে পদে আমরা আঘাতের স্বীকার হয়েছি। কিন্তু আমরা ক্ষমতায় এসে প্রতিশোধ নিতে যাইনি।
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা স্মরণে আজ রোববার (২১ আগস্ট) সকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে আয়োজিত সমাবেশে অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমরা কাউকে কারাগারে পাঠাইনি। তত্ত্বাবধায়ক সরকারে আমলে যেসব মামলা হয়েছিল সেগুলোই চলছে।
তিনি আরও বলেন, আপনারা খালেদা জিয়ার বক্তৃতাগুলো দেখবেন। এসব বক্তৃতায় বলা হয়েছে, আওয়ামী লীগ ১০০ বছরেও ক্ষমতায় আসতে পারবে না। এমনকি বিরোধী দলেও থাকতে পারবে না। তার মানে আমাকে হত্যার পরিকল্পনা তারা নিয়ে ফেলেছিল।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ৭৫-এর ১৫ আগস্ট শুধু রাষ্ট্রপতিকেই হত্যা করা হয়নি, হত্যা করেছে পুরো পরিবারকে। যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশকে পুনর্গঠনের জন্য তিনি কাজ করেছেন। তার বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচার চালিয়েছিল এবং হত্যা করেছে।
সরকারপ্রধান বলেন, ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় ছিলাম, ২০০১ সালে আমরা ক্ষমতায় আসতে পারিনি আমাদের কিছু লোক চক্রান্ত শুরু করে। আমেরিকান কোম্পানির গ্যাস নিতে চেয়েছিল সেটাতে আমি সমর্থন করেনি কিন্তু খালেদা জিয়া সেটাতে সমর্থন করে ক্ষমতায় আসে। নানা ষড়যন্ত্র করে আমাদের হারিয়ে দেওয়া হলো। বেগম খালেদা জিয়া ক্ষমতায় আসে।
আওয়ামী লীগের সভানেত্রী বলেন, সারাদেশে নেতাকর্মীদের ওপর অত্যাচার-নির্যাতন শুরু করলো। পাকিস্তানি সেনারা যেভাবে নির্যাতন করেছিল ঠিক সেভাবেই অত্যাচার-নির্যাতন শুরু হয়েছিল আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর। একজন বিদেশি রাষ্ট্রদূতের ওপর ট্রেনে হামলা হলো। এটা কতটা ন্যক্করজনক একটি রাষ্ট্রের জন্য। আমরা এগুলো নিয়ে সমাবেশ করলাম।
শেখ হাসিনা বলেন, জাতীয় সংসদে এগুলো নিয়ে কথা বললাম। আমার মাইক বন্ধ করে দেওয়া হলো। ওখানে বললো যে আমি নিজেই নিয়ে গেলাম। সমাবেশে হামলা হলো। খুনিদের সেই রাতে পাঠিয়ে দেওয়া হলো। রাতারাতি সব আলামত নষ্ট করার চেষ্টা করা হলো। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়া এ ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে না। আজ গুম-খুনের কথা বলেন জিয়াউর রহমান এই গুম-খুন শুরু করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, বিএনপির আমলে লাশ টানা, বোমাবাজিতে আহত হওয়া- এটা ছিল আমাদের প্রতিদিনের কাজ। আজ নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার কথা বলেন- ২০০১ সালের নির্বাচন আমরা দেখেছি। ৯৬ সালে ক্ষমতায় এসেছিলাম যার কারণেই ২০০৪ সালে আমাকে শেষ করে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে। ২১ আগস্ট হামলার সময় মেজর ডালিম ও রশিদ বাংলাদেশে ছিল। তারা যখন দেখলো আমি মরিনি তারা দেশ ছেড়ে চলে গেলো। সে সময় বেগম খালেদা জিয়ার বক্তব্যগুলো আপনারা খেয়াল করবেন।
এর আগে ২০০৪ সালের ২১ আগস্টে গ্রেনেড হামলায় নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। রোববার সকালে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউর আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ২১ আগস্টের নিহতদের স্মরণে নির্মিত অস্থায়ী স্মৃতিফলকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন তিনি।
উল্লেখ্য, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে আওয়ামী লীগের ‘সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও দুর্নীতিবিরোধী’ সমাবেশে গ্রেনেড হামলায় দলটির তৎকালীন মহিলা বিষয়ক সম্পাদক ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের সহধর্মিণী আইভি রহমানসহ ২৪জন নেতা-কর্মী মারা যান। আহত হন পাঁচ শতাধিক নেতা-কর্মী। আহতদের অনেকে এখনও শরীরে গ্রেনেডের স্প্লিন্টার নিয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন।
Array