মারুফ আহমেদ কুমিল্লা:
বর্তমান বিশ্বের বহুল বিষয় হলো চতুর্থ শিল্পবিপ্লব। চতুর্থ শিল্প বিপ্লব হলো আধুনিক স্মার্ট প্রযুক্তি ব্যবহার করে প্রচলিত উৎপাদন এবং শিল্প ব্যবস্থার স্বয়ংক্রিয়করণের একটি চলমান প্রক্রিয়া। তাই সমৃদ্ধশালী দেশ গড়তে আধুনিক তথ্য প্রযুক্তি নির্ভর রোবটিক্স, পোগ্রামিং এ দক্ষ জনগোষ্ঠী গড়ে তোলার কোনো বিকল্প নেই। সেই লক্ষ্যেই কুমিল্লায় চলছে রোবটিক্স নিয়ে মহা কর্মযজ্ঞ।
রোবটিক্সকে জনপ্রিয় করতে কুমিল্লা জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে স্থাপিত হয়েছে ভিন্নধর্মী স্কুল অব রোবটিক্স কুমিল্লা। প্রতিষ্ঠানটির সাথে সংশ্লিষ্টদের দাবি এটিই দেশের প্রথম রোবটিক্স শেখার স্কুল। স্কুলটিতে বিভিন্ন বয়সী শিক্ষার্থীরা শিখছে রোবট তৈরীর নানা কলা কৌশল, শিখছে রোবট পরিচালনায় পোগ্রামিং এর নানা ভাষা।
চলতি বছরের ১ জুলাই আনুষ্ঠানিকভাবে জেলায় স্কুলটির যাত্রা শুরু হয়। বর্তমানে নগরীর কালেক্টরেট স্কুল অস্থায়ীভাবে চলছে স্কুলটির কার্যক্রম। সপ্তাহে তিনদিন স্কুলটিতে রোবটিক্সের নানা দিক সম্পর্কে ধারনা নিচ্ছে বিভিন্ন বয়সী প্রায় ১৭০ শতাধিক শিক্ষার্থী। এছাড়াও কুমিল্লার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নিচতলায় স্থাপন করা হয়েছে একটি অত্যাধুনিক ফ্যাবল্যাব। সেখানে রোবট তৈরিসহ রোবটিক্সের নানা বিষয়ে হাতে কলমে শিখছে ক্ষুদে শিক্ষার্থীরা। সাপ্তাহিক ছুটির দিনের শুক্রবারে স্কুলটিতে যেয়ে দেখা যায়, নানা বয়সী বাচ্চারা মগ্ন রোবটিক্স, পোগ্রামিং এর নানা কলা-কৌশলে। খুব মনযোগ সহ তারা শিখছে পোগ্রামিং এর নানা ভাষা।
স্কুল অব রোবটিক্স নিয়ে আগ্রহের কমতি নেই এখানে আসা শিক্ষার্থীদের। প্রযুক্তির প্রতি ভালোলাগা থেকে স্কুলটিতে আসার কথা জানিয়ে ফাহিম নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, অনেক সময়ে গদবাধা পড়াশোনার কারণে আমরা আগ্রহ হারিয়ে ফেলি। এখানে তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর স্কিলের উপর জোর দেওয়া হয় যে বিষয়গুলো আমাদের ভবিষ্যতে কাজে দিবে। বর্তমান চাকরির বাজার খুবই প্রতিযোগিতামূলক। যখন আমি চাকরির বাজারে যাবো তখন স্কিলগুলোর কারনে অন্যদের তুলনায় একধাপ এগিয়ে থাকবো।
স্কুলের প্রশিক্ষক সনজিৎ মন্ডল বলেন, বাংলাদেশের সর্বপ্রথম রোবটিক্স স্কুল হিসেবে আমরা এমন কিছু যন্ত্রপাতি নিয়ে আসবো যেগুলো বাংলাদেশের অন্য কোনো স্কুলে নেই। বাচ্চাদেরকে হাতে কলমের পাশাপাশি ড্রোন, রোবটিক্স এবং আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহারে সর্বোচ্চ সুযোগ সুবিধা দিয়ে শেখানোর চেষ্টা করছি। বাচ্চাদের আগ্রহ দেখে আমরা আশাবাদী একদিন তারাও আট- দশজনকে শেখাবে এবং প্রযুক্তিকে অন্য পর্যায়ে পৌঁছাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
স্কুল অব রোবটিক্সের স্বপ্নদ্রষ্টা কুমিল্লার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান। এই স্কুল নিয়ে তিনি বলেন, দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তোলার জন্য প্রয়োজন আধুনিক জ্ঞানসমৃদ্ধ মানুষ। আর আধুনিক তথ্য প্রযুক্তির অন্যতম নিয়ামক হলো ন্যানোটেকনোলজি, বায়োটেকনোলজি, রোবটিক্স, প্রোগ্রামিং,আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্ট ইত্যাদি। এইবিষয়গুলো সুবিন্যস্তভাবে স্কুলে লেভেলে পড়ানোর সুযোগ থাকে না। এই বিষয়গুলো চিন্তা করে শিক্ষার্থীদেরকে এসব বিষয়ে দক্ষ করে গড়ে তোলার লক্ষে আমাদের স্কুলে অব রোবটিক্স।
এই স্কুলের মাধ্যমে তাদের স্কিল ডেভেলপমেন্ট করবে এবং তারাই আগামীর দক্ষ মানব সম্পদ হিসেবে অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
Array